পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তৃতীয়

পলায়ন

 বেথুনে পড়িবার সময় আমার তিনটী অন্তরঙ্গ বালিকা বন্ধু লাভ ঘটিয়াছিল। তন্মধ্যে কমলার পরিচয় একটু বিশেষভাবে দিব। কারণ তাহার জীবনের সহিত আমার জীবন এক অচ্ছেদ্য সম্বন্ধে জড়িত। বাল্যকালের কোন বন্ধুর সহিত এখন আর দেখা হয় না। অনেককেই ভুলিয়া গিয়াছি। কিন্তু কমলাকে এখনও ভুলিতে পারি নাই। সেও আমাকে হয়ত ভুলে নাই। আজ এই আত্মচরিত লিখিবার সময়ে তাহার কথা প্রতিমুহুর্তে আমার মনে হয়―অতীত জীবনের সুখ দুঃখের কত কথা আজ মনে হইতেছে।

 কমলা পরমা সুন্দরী ছিল―ছিল কেন, এখনও বোধ হয় আছে। নারীর সৌন্দর্য্য সম্বন্ধে পুরুষেরা বলিয়া থাকে,―“স্ত্রীলোক কুড়ি পার হইলেই বুড়ি।” একথা সকলের সম্বন্ধে খাটেনা। কুড়ির পর আরও কুড়ি বৎসর চলিয়া গিয়াছে, তবু এমন নারী হিন্দুসমাজে যথেষ্ট আছে, যাহাদের সৌন্দর্য ভাদ্রের ভরানদীর মত ঢল ঢল, শরতের জ্যোৎস্নার ন্যায় অনাবিল, তাহাতে মলিনতার লেশ মাত্র নাই। আমি নিজে নারী হইয়া নারীর রূপে আকৃষ্ট হইয়াছি, শুনিয়া হয়ত আপনারা হাসিবেন।