পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পলায়ন
৪৩

জানিতাম। প্রথম প্রণয়-সম্ভাষণ, বাসর রজনী যাপন, মানঅভিমানের অভিনয়, পুরুষের ব্যবহার প্রভৃতি বিষয় লইয়া আমাদের মেয়ে মহলে নিত্য আলোচনা হইত। এই সকলের মধ্যে আমি আমার ছোট গল্পের প্লট্ ও কবিতার উপাদান পাইতাম। তাই মুকুলদা আমাকে বলিতেন “মানু, তোমার গল্পে ও কবিতায় আমি রিয়্যালিষ্টিক আর্টের গন্ধ পাচ্ছি।”

 প্রায় আট নয় মাস হইল, কমলার সহিত তাহার স্বামীর বিচ্ছেদ ঘটিয়াছে। ইহার কারণ বড় ভয়ানক। কমলার শ্বশুর কিরূপে শুনিয়াছেন, কমলার মাতা কমলার পিতার বিবাহিতা পত্নী নহে―রক্ষিতা মাত্র। সুতরাং জানিয়া শুনিয়া পতিতা নারীর কন্যাকে তিনি পুত্রবধূ রূপে গৃহে রাখিতে পারেন না। তিনি লিখিয়া জানাইয়াছেন―কমলাকে আর তিনি গ্রহণ করিবেন না।―পুত্রের পুনর্ব্বার বিবাহ দিবেন। তিনি আরও ভয় দেখাইয়াছেন, যদি কমলা ভরণ-পোষণের দাবী করে, তবে আদালতে তিনি সমস্ত কলঙ্কের কথা প্রকাশ করিয়া দিবেন, এবং প্রতারণার অভিযোগ করিয়া কমলার পিতার বিরুদ্ধে পাল্টা মোকদ্দমা আনিবেন।

 এই ব্যাপার উপলক্ষে কমলার স্বামী যে কয়েকখানা পত্র তাহার নিকট লিখিয়াছিলেন তাহা বড়ই করুণ। তিনি কমলাকে অতিশয় ভালবাসিতেন। কমলাও তাহার স্বামীর প্রতি বিশেষ অনুরক্ত ছিল। কে যেন দারুণ খড়্‌গাঘাতে ইহাদের প্রেমের বন্ধন ছিন্ন করিয়া দিল। কমলার স্বামী লিখিয়াছেন―“কি কর্‌ব―তোমার কোন অপরাধ নেই জানি কিন্তু আমি পিতার অবাধ্য হ’তে পারি নে। আমায় ক্ষমা কর কমল। ধর্ম্মসাক্ষী করে