পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজ্যাভিষেক
১৩১

ও উঁচু এক সোনার চৌকীতে বসিলেন। তাহার পাশে বসিলেন রাণী সোইরা বাঈ, সহধর্ম্মিণী বলিয়া রাণীর আঁচল শিবাজীর আঁচলে গির বাঁধিয়া দেওয়া হইল। কিছু পশ্চাতে যুবরাজ শম্ভুজী বসিলেন। আট কোণে আটটি সুবর্ণ কলস এবং আটটি ছোট ভাঁড় ভরিয়া গঙ্গা প্রভৃতি সপ্ত মহানদী ও অন্যান্য বিখ্যাত নদ-নদী-সমুদ্র এবং তীর্থস্থলের জল আনিয়া রাখা হইয়াছিল। প্রত্যেক কলসের কাছে অষ্টপ্রধানের এক একজন দাড়াইয়া। তাঁহারা ঠিক মুহুর্তে ঐ জল শিবাজী, রাণী ও রাজপুত্রের মাথায় ঢালিয়া দিলেন; আর শ্লোক-পাঠ ও মঙ্গলবাদে আকাশ কাঁপিয়া উঠিল। ষোলজন সধবা ব্রাহ্মণী সুশোভন বস্ত্র পরিয়া সোনার থালায় পঞ্চ-প্রদীপ লইয়া তাঁহার মাথার চারিদিকে ঘুরাইয়া মঙ্গল আরতি করিলেন।

 তাহার পর ভিজা কাপড় ছাড়িয়া, রাজার যোগ্য জরির কাজ করা লাল বস্ত্র এবং মণিমুক্তাহীরা বসান নানাপ্রকার উজ্জ্বল অলঙ্কার পরিয়া, গলায় ফুলের মালা ও মাথায় মুক্তার অসংখ্য ঝালরে সজিত পাগড়ী দিয়া, শিবাজী নিজ ঢাল তলোয়ার তীর ও ধনুকের “অস্ত্রপূজন” করিলেন, এবং এই উপলক্ষে আবার ব্রাহ্মণদের চরণ বন্দনা (তথা দক্ষিণা দান) করিলেন।

সিংহাসন-গৃহের সজ্জা

 অবশেষে তিনি সিংহাসন-গৃহে ঢুকিলেন। এই ঘরের সজ্জায় অগাধ ধনরত্ন ঢালিয়া দেওয়া হইয়াছিল। ছাদের নীচে জরির শামিয়ানা খাটান, তাহা হইতে লহরে লহরে মুক্তার মালা ঝুলিতেছিল। মেঝেতে মখমল বিছান: মধ্যস্থলে বহু পরিশ্রমে প্রস্তুত অশেষ কারুকার্যে শোভিত, “অমূল্য নবরত্নে খচিত” এক প্রকাণ্ড সোনার সিংহাসন। সিংহাসনের তলদেশ সোনার চাদর দিয়া মোড়া; আট কোণে আটটি স্তম্ভ, মণি-