পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাঁচ বৎসর ধরিয়া যুদ্ধ, ১৬৬০-১৬৬৪
৫১

আশ্রয় পাইয়াছেন। বাজীপ্রভু প্রাণ দিয়া পণ রক্ষা করিলেন। বিজাপুর-পক্ষের কর্ণাটকী বন্দুকচীরা গুলির পর গুলি চালাইয়া ঐ গিরিসঙ্কট জয় করিল, অবশিষ্ট মাব্‌লেরা মৃত সেনানীর দেহ লইয়া পাহাড়ে পলাইয়া গেল।

 সুলতান আলি আদিল শাহ জোহরের বিশ্বাসঘাতকতার পরিচয় পাইয়া “দুই বিদ্রোহীকেই” দমন করিবার জন্য স্বয়ং রাজধানী হইতে পনহালার দিকে অগ্রসর হইলেন। জৌহর দেখিলেন আর ত ফাঁকি দেওয়া চলে না; তখন তিনি ২২এ সেপ্টেম্বর মারাঠাদের হাত হইতে পনহালা দুর্গ ফিরাইয়া লইয়া সুলতানকে অর্পণ করিলেন।

শায়েস্তা খাঁর পুণা ও চাকন অধিকার

 যখন শিবাজীর রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্তে তাঁহার এই পরাজয় ও ক্ষতি হইতেছিল, ঠিক সেই সময় উত্তর সীমানায় আর এক মহাবিপদ ঘটিল। ২৫এ আগষ্ট ১৬৬০ মুঘলেরা তাঁহার হাত হইতে বিখ্যাত চাকন-দুর্গ কাড়িয়া লইল।

 ১৬৫৯ খৃষ্টাব্দের শেষভাগে আওরংজীবের সিংহাসন নিষ্কণ্টক হইল, ভ্রাতাদের বিরুদ্ধাচরণের আর কোন ভয় রহিল না, কারণ সর্ব্বত্রই তাঁহার জয় হইয়াছে। এইবার তিনি দাক্ষিণাত্যের দিকে দৃষ্টি ফিরাইবার অবকাশ পাইলেন। নিজ মাতুল শায়েস্তা খাঁকে দাক্ষিণাত্যের সুবাদার নিযুক্ত করিয়া তাঁহাকে শিবাজীর বিরুদ্ধে পাঠাইলেন।

 শায়েস্তা খাঁ যেমন বুদ্ধিমান তেমনি বীর; নেতৃত্বে ও দেশ-শাসনে সমান দক্ষ; বহু যুদ্ধক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়াছেন। ধনে-মানে প্রভাব-প্রতিপত্তিতে এক মীরজুমলা ভিন্ন কেহই তাঁহার সমকক্ষ ছিল না। তিনি অতি চতুর প্রণালীতে আহমদনগর হইতে (২৫এ ফেব্রুয়ারি, ১৬৬০) কুচ করিয়া পুণা জেলার পূর্ব্ব ও দক্ষিণ দিক ঘুরিয়া, সন্মুখ হইতে