পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পাঁচ বৎসর ধরিয়া যুদ্ধ, ১৬৬০-১৬৬৪
৬১

রাখার আবশ্যকতা অনুভব করেন নাই। ____ খ্রিষ্টাব্দে বাদশাহর পক্ষে ইনাএৎ খাঁ সুরত বন্দরের শাসনকর্ত্তা ছিল; লোকটি যেমন অর্থলোভী তেমনই কাপুরুষ ও অকর্ম্মণ্য। কিন্তু দুর্গটি একজন সৈনিক কর্মচারীর হাতে ছিল, সে ইনাএৎ-এর অধীনতা স্বীকার করিত না।

ইংরাজ কুঠীর আশ্চর্য্য আত্মরক্ষা

 মঙ্গলবার, ৫ই জানুয়ারি, প্রাতে সুরতবাসিগণ সভয়ে শুনিল দুইদিন পূর্ব্বে শিবাজী সসৈন্য আটাশ মাইল দক্ষিণে পৌঁছিয়াছেন, এবং সুরতের দিকে দ্রুত অগ্রসর হইতেছেন। অমনি শহরময় শোরগোল উঠিল আতঙ্কে লোকজন পলাইতে সুরু করিল। যে পারিল স্ত্রীপুত্র লইয়া নদী পার হইয়া দূরবর্ত্তী গ্রামগুলিতে আশ্রয় লইল। ধনী লোকেরা দুর্গের অধ্যক্ষকে ঘুষ দিয়া সপরিবারে তথায় স্থান পাইলেন; তাহাদের মধ্যে শহরের রক্ষক ইনাএৎ খাঁ সর্ব্বপ্রথম।

 অথচ মুষ্টিমেয় ইউরোপীয় দোকানদার এই সময়ে আশ্চর্য্য সাহস দেখাইয়া নিজ ধন প্রাণ মান বাঁচাইতে সক্ষম হইল। সুরতের ইংরাজ ও ডচ্ বণিকগণ নিজ নিজ কুঠীতে অস্ত্র লইয়া দাঁড়াইয়া শিবাজীর সমস্ত সৈন্যবলকে হটাইয়া দিল। তাহাদের কুঠীগুলি সাধারণ খোলাবাড়ী,— দুর্গ নহে, চারিদিকে সীমানা-ঘেরা দেওয়াল পর্য্যন্ত ছিল না। ইংরাজ-কুঠীর প্রধান, স্যার জর্জ অকসিণ্ডেন, ইচ্ছা করিলে সহজেই সুহায়িলীতে পলাইয়া প্রাণ বাঁচাইতে পারিতেন, কিন্তু তাহা না করিয়া স্বয়ং সুরতে থাকিয়া যুদ্ধের নেতৃত্ব লইলেন। সত্বর ছয়টি ছোট ছোট কামান সংগ্রহ করিয়া, সুহায়িলী হইতে জাহাজী গোরা আনিয়া, মোট একশত পঞ্চাশ জন ইংরাজ এবং ষাটজন পিয়নকে সুরতের কুঠী রক্ষা করিবার জন্য সজ্জিত করা হইল। চারিটি কামান ছাদের উপর বসান হইল, তাহার গোলা পাশের দুটি রাস্তা এবং নিকটবর্ত্তী হাজী সাইদ বেগের বাড়ীর