পাতা:শিশু-ভারতী - সপ্তম খণ্ড.djvu/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

টাকার কথা বদলে আর একট। দ্রব্য পাওয়ার মুস্কিল আছে। হয়ত রামের কাছে দুইটি পাখী আছে ; কিন্তু তার চাই ছাগলের চামড়া ; অথচ যার কাছে ছাগলের চামড়া আছে সে চায় না পার্থী। বা হয়ত পার্থী নিতে প্রস্তুত আছে, কিন্তু তাহার চামড়া এতটা পরিমাণ নাই যে তাহার বদলে পাখী পাইতে পারে ; বা হয়ত যে-লোকটির ছাগল-চামড়া আছে যে শুধু মাছের সচিতই বিনিময় করিয়াছে, ছাগল চামড়ার সহিত বিনিময় করে নাই, তাই কতটা পরিমাণ চামড়া দিলে একটা পার্থী পাওয়া যায় তা জনে না। এরূপ ক্ষেত্রে কি করা যায় ? প্রাচীনের। ইছারও একটা উপায় বাতির করিয়াছিলেন : ধর রাম’ একট। পাথর বদলে 'চরি'র নিকট হইতে মাছ গ্ৰহণ করিল অপচ রামের মাছের প্রয়োজন নাই, কিন্তু “যদু’র আছে ; চরির নিকট চাইতে মাছ লষ্টয়া যদুকে দিল এবং তাছার বদলে যদুর নিকট হইতে ছাগলের চামড়া গ্রহণ করিল। কিন্তু এই সব মুস্কিলের অবসান হয় যদি এমন কোন বস্তু ওয়া ধায় যাহ। সকলেই লইতে প্রস্তুত, তাহা হইলে এত হাঙ্গানা করিতে হয় না ; সকলের কাম্য বস্তুটি সংগ্ৰছ করিয়া রাখিলে যখন-ইচ্ছা যে-কোণদ্রব্য ইচ্ছা পাওয়া যাইতে পারে। টাকাকড়ি এই সমস্তাব সমাধান করিয়ছে। পরস্পরের মধ্যে দ্রব্য বিনিময় করিতে করিতে দেখা গেল যে, এরূপ কতকগুলি পণ্য আছে যাহা সকলেই চায় এবং যাহার বিনিময়ে যে-কোন সময়ে অপর যে-কোন অভাগিাত বস্থ পাওয় যাইতে পারে। এইরূপ পণ্যই বিনিময়ের বাহন হইয়া দাড়ায়। অর্থাৎ কোন পণ্যের মূল্য নিদ্ধারণের সময় এইরূপ সৰ্ব্বজন আদিত পণ্যই আদর্শ ধরা হইত। প্রাচীন কৃষি উপঞ্জীবিকা-প্রধান গ্ৰীকৃ সমাজে গবাদি পশু বিনিময়ের বাইনরূপে ব্যবহৃত হইত। কৰ্ম্মপটু বাদি দাগীর মূল্য ধরা হইত চারটি যণ্ডের সমান। শুধু গ্ৰীস বলিয়াই নয় প্রায় সকল কৃষিপ্রধান দেশেই অতি প্রাচীন কালে মেষ, গরু, মহিষ প্রভৃতি পশুই মূল্যের মান বলিয়া ধরা হইত। কিন্তু যে-সব জাতিকে প্রধানত: শিকার করিয়া বা মাছ ধরিয়া জীবিকানিৰ্ব্বাছ করিতে হইত, তাহাদের মধ্যে এই সব গৃহপালিত পশুকে মূল্যের মান বা টাকাকড়িরূপে ব্যবহার করার রেওয়াজ ছিল না। আইসল্যাণ্ডের অধিবাসীরা মাছকেই বিনিময়ের २१७७ ---------- বtছনরূপে ব্যবহার করিত ; তাহারা মেয়েদের পায়ের একজোড়া মোজার দাম ধরিত তিনটি মাছের সমান ; আধ পাউণ্ড চলির মূল্য পাঁচটি মাছের সমান ইত্যাদি। রুশ দেশে মধ্যযুগে চামড়াই মূল্যের মাম ছিল। ভাজনিয়ার মান ছিল তামাক । শিল্পেমতি ও অন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রচলনের পর বিনিময়ের বাস্থনরূপে ধাতুর ব্যবহার দেখা যায়। শস্ত বা পশু দেশ-বিদেশে বহন করিয়া লইয়া ধাওয়া সকল ক্ষেত্রে সুধিধাজনক নহে এবং বিদেশী ব্যাপারী সকল সময়ে তাহা লইতেও চাচ্ছে না। টিন, তামা, রূপা, সোণ প্রভৃতি ধাতু নানা কর্য্যে નાcગ બનઃ જાનાજી... નહેમ યા૯મા૩ માટ૬, ૮નર્દે হেতু সকল দেশের লোকের কাছে তাছার একটা মূল্য আছে। ধাতুগুলি তাই সহজেই বিনিময়ের বাহন হইতে পারিয়াছিল। ধাতু ওজন করিয়া তাছার মূল্য নিরূপণ করা হইত। কিন্তু যদি দ্রব্য আদান-প্রদানের সময় সকল ক্ষেত্রে ধাতু ওজন করিয়া মূল্য স্থির কবিতে ছয়, তাছা হইলে কাজের ঝঞ্ঝাট বাড়িয়া যায় এবং ওজনের জুয়াচুরি হইতে নিস্তার পাওয়াও দুষ্কর হইয়া উঠে। এই ওজন ঠিক রাখিবার জন্য, যে সব গোমা, রূপা, তামা, টিন সুপরিচিত ও স্ব প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ী বা কুঠিয়ালের হতে আসিয়া পড়িত তাছারা তাহাতে স্বীয় স্বীয় নাম অঙ্কিত করিয়া দিতেন। কিন্তু ইহাতেও বিশেষ সুবিধা হইল না। তখন রাষ্ট্র, ধাতুর উপর স্বীয় চিহ্ন অগ্নিত করিয়া দিয়া লোকের বিশ্বাস বিনিময়ের বাইনের উপর অক্ষুণ্ণ রাখিলেম । সকল ধাতুর মধ্য হইতে টাকাকড়ি নিৰ্ম্মাণের জন্ত সোণা-রূপাকে বিশেষভাবে বাছিয়া লওয়া হইয়াছে ; তাহার কারণ, সোণ-রূপার কতকগুলি বৈশিষ্ট্য আছে । সোণ-রূপা খুব সহজেই এক স্থান হইতে আর একস্থানে বহন করিয়া লইয়া যাওয়া যায়। আয়তন ও ওজনের তুলনায় সোণা-রূপার মূল্য অনেক ; সেই জন্য একস্থান হইতে আর একস্থানে বহন করিয়া লইয়া যাওয়ার খরচাও তুলনায় কম। তাই পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই সোণার দাম এক থাকে ; কেন না যেই একটা দেশে সোণ বেশী জৰিয়া উঠে অমনি সহজেই সেট যে-দেশে সোণ ঘাটতি পড়িয়াছে, সেই-দেশে চালান করিয়া দেওয়া যায়।