পাতা:শিশু - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬৮
শিশু

আমার এ গান যেন নাহি মানে মানা-
উদার বাতাস হয়ে এলাইয়া ডানা
সৌরভের মতো তোরে  নিয়ে যায় চুরি ক'রে,
খুঁজিয়া দেখাতে যায় স্বর্গের সীমানা॥

এ গান যেন রে হয় তোর ধ্রুবতারা,
অন্ধকারে অনিমেষে নিশি করে সারা;
তোমার মুখের 'পরে  জেগে থাকে স্নেহভরে,
অকূলে নয়ন মেলি দেখায় কিনাৱা॥

আমার এ গান যেন পশি তোর কানে
মিলায়ে মিশায়ে যায় সমস্ত পরানে—
তপ্ত শোণিতের মতো  বহে শিরে অবিরত,
আনন্দে নাচিয়া উঠে মহত্ত্বের গানে॥

এ গান বাঁচিয়া থাকে যেন তোর মাঝে,
আঁখিতারা হয়ে তোর আঁখিতে বিরাজে।
এ যেন রে করে দান  সতত নূতন প্রাণ,
এ যেন জীবন পায় জীবনের কাজে॥

যদি যাই, মৃত্যু যদি নিয়ে যায় ডাকি,
এই গানে রেখে যাব মোর স্নেহ-আঁখি।
যবে হায় সব গান  হয়ে যাবে অবসান
এ গানের মাঝে আমি যেন বেঁচে থাকি॥