পাতা:শুভদা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Sዓ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ নিকট হইলেও হলুদপুরের একথা প্ৰায় কেহই জানিতে পারিল না ; তবে বিন্দুর পিতা ভবতারণ গাঙ্গুলি একথা জানিলেন ; বোধহয় নদীরাই তঁহাকে এ ঘটনা জানাইয়াছিল। তিনি সন্ত্রান্ত এবং বৰ্দ্ধিষ্ণু লোক, ইচ্ছা! করিলে হারাণ মুখুয্যেকে অনায়াসে হাজত মুক্ত করিতে পারিতেন। কিন্তু কিছুই করিলেন না। সহায়-সম্বলহীন মুখুয্যে মহাশয় হাজত গৃহেই পচিতে লাগিলেন। আর এক কথা-কলহপ্ৰিয়া কৃষ্ণঠাকুরাণী এ ঘটনা যে কেমন করিয়া শুনিয়াছিলেন তাহা শুধু তিনিই বলিতে পারেন। বৈশাখের দ্বিপ্রহর কালমেঘে আচ্ছন্ন হইয়া ক্রমশঃ অন্ধকার হইয়া আসিতেছে। এই সময় হারাণবাবুর বাটীর রন্ধনশালার বারান্দায় তাহার স্ত্রী ও বড় কন্যা৷ ললনা মুখোমুখি হইয়া বসিয়া আছে। দুজনেরই মুখ শুষ্ক ; আজ একাদশী-ললনা বাল্যবিধবা ; আর তাহার জননী-তিনিও এখন পৰ্য্যন্ত কিছুই আহার করেন নাই। ললনা বলিল, মা, আজো বোধহয় বাবা আসবেন না । মেঘ করে আসচে, যদি জল হয় তাহলে রান্নাঘরে দাড়াবার জায়গা থাকবে না ; তুমি কেন একটু কিছু খেয়ে নাও না । লালনার জননী বলিল, আরও একটু দেখি ; তিন দিন আসেন নিআজ যদি আসেন ? মা, বাবা এমনতর ত কখন করেন নি ; তিন দিন আসেন নি-আজি যদি না আসেন ? কি কয়ব বল, ভগবান আছেন। একাদশীর দিন রাসমণি (হারাণবাবুর বড় ভগিনী) বেলা করিয়া স্নান পূজা করিতেন ; এখন নিত্যকৰ্ম্ম সমাপ্ত করিয়া মালা ফিরাইতে ফিয়াইতে নিকটে আসিয়া চিৎকার করিয়া বলিলেন, বৌ, এখন পৰ্য্যন্ত খাসনি ? R