পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কি, হার মেনে যখন পালাবই, শেষ হিসাব কষবই, তোমার জন্য আর দু’চারটা মাস নয় সয়েই যাই । ঃ চলে যাবে ? পালাবে ? তার ব্যাকুল প্রশ্নের জবাবে ঠোঁটে আঙুল দিয়ে ইঙ্গিতে তাকে চুপ করতে জানিয়ে খিল খিল করে হেসে উঠে নন্দিতা বলে, চলে যাব মানে ? পালাব মানে ? তোমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে । কী আরামে আছি । কী স্বাধীন সুন্দর জীবন । ইচ্ছে হলেই বেরিয়ে যেতে পারি।-দু’একদিন না। ফিরলেই বা কি । সমরেশ চুপ করে তার মুখের দিকে চেয়ে বসে থাকে। নন্দিতা কাছে সরে এছে। নীচু গলায় বলে, আস্তে কথা বলে । বাইরে দু'একদিন কাটিয়ে আসতে দেয়, তাই বলে সারাদিন বাড়ীতে কি করি জানার জন্য স্পাই রাখা কি বাদ দিয়েছে ? সত্যি হার মেনেছি।--আর সইছে না । মানুষটা বাড়ীতে থাকলে তো বটেই, না থাকলেও কেমন একটা দিম আটকানো অবস্থায় আছি মনে হয়। বাচ্চাটার ওপর সত্যি মায়া পড়েছে, কিন্তু মায়ার খাতিরেও টানতে পারব না । সমরেশ চুপ করে থাকে। দিন সাতেক পরে সকালবেল সমরেশকে বাড়ীতে ডেকে নন্দিতার সামনে ভবানী তাকে বলে, কারবারের সঙ্গে বাড়ীটাও যেত, অনেক চেষ্টা করে বাড়ীটাকে বাঁচাবার ব্যবস্থা ঠিক করেছি। কারবার ছেড়ে দাও । আমি সামলে সুমলে মিটিয়ে দেব।

বাড়ীটা বঁাচবে মামা ?
দেব বঁচিয়ে বাড়ীটাকে । তোর নতুন মামী জিদ ধরেছে করব কি । কোনও ব্যাপারে তুই কিন্তু একটি কথা কইবি না। সমু। যে যা বলুক, তুই শুধু শুনে যাবি, নেহাৎ যদি চেপে ধরে তো সাফ জানিয়ে দিবি যে মামার কাছে যাও, মামা সব জানে, আমি কিছু জানি না ।

S OW)