পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ময়লা ছেড়া কাপড় । স্নান শীর্শ মুখ । তবু মুখে হাসি ফুটিয়ে বলেছিল, এত রাতে তুমি ? কি হয়েছে বাবা ? কুমার বলেছিল, রুটি আছে মা ? একবার ঢোক গিলেই কুমারের মা হেসে বলেছিল, শুকনো রুটি কি দিতে আছে অতিথি বন্ধুকে ? ভাবিস নে, দুখানা পরোটা তোর বন্ধুকে দিতে পারব । খাটি ঘিয়ের নয়। অবশ্য-ভেষজ তেলের । t মসুরের ডাল আর কুমড়োর ছেচকি দিয়ে পেট ভরে পরোটা খেয়ে গাঢ় ঘুম আসার প্রাথমিক প্রক্রিয়ায় ঝিমিয়ে গিয়েছিল সমরেশের দেহ-মন। কিন্তু যেতে হবে। দূরদূরান্তরে চলে যেতে হবে। উচিত কাজ করতে চাওয়ার জন্য যে দেশের মা ছেলের গালে এমনভাবে চড় কন্যায়, সে দেশের ধারে কাছে সে থাকবে না । খেয়ে উঠে চোখ টান টান করে বলেছিল, এধায় আমি যাই । কুমার বলেছিল, এত ব্যস্তবাগীশ কেন রে তুই ? বোস না একটু। কুমারের মা বলেছিল, তোকে খানিকক্ষণ বসতে হবে সমু। একটা দরকারী কথা আছে । হাতের কাজ সোরে এসে বলছি । কুমারের বিছানাতেই ঘুমিয়ে পড়েছিল সমরেশ । ভোরবেলা মা গিয়েছিল তাকে ফিরিয়ে আনতে । কুমারের বাড়ী থেকেই নিশ্চয় খবর পৌচেছিল। রান্না ঘরেই ভাঙা-চোরা ঘরোয়াভাবে পেরেক ঠুকে মেরামত করা জল চৌকিটাতে বসে কড়ায়ে অল্প তেলে শাকটা নাড়তে নাড়তে ঢলে পড়ে গিয়ে মা বিছানা নিল তার দায় ঘাড়ে নেবার ক’মাস পাৱে । সমরেশ চালু করেছিল দৈনিক দু’চার পয়সায় শাক সকলে ভাগাভাগি করে খাওয়ার ব্যবস্থা । 8 R