পাতা:শেষের পরিচয় - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষের পরিচয় २१० রাখাল বলিল-নিশ্চয়ই তুমি জানো, তারক যার-তার হাতের অন্ন গ্ৰহণ করেন । সারদা হাসিতে লাগিল, জবাব দিলন । রাখাল বলিল-চললুম। তা’হলে । জিনিষপত্র কিনে একেবারে বাসা থেকে স্নান সেরে বাক্স বিছানা নিয়ে ফিরব এখানে । তুমি প্ৰস্তুত থেক । রাখাল বাহির হইয়া গেল। ফিরিয়া আসিল প্ৰায় পৌনে এগারটায় । একটি ফলের টুকরিতে কমলালেবু, বেদান, আঙএর প্রভৃতি ফল, তালমিশ্ৰী, বার্লি, পার্ল সাগু, একটান উৎকৃষ্ট মাখন, একটান রোগীর পথ্য হালকা বিস্কুট ইত্যাদি কিনিয়া আনিয়াছে। এছাড়া, বেড় প্যান, হাঁটুওয়াটার ব্যাগ, আইস ব্যাগ, অয়েল ক্লথ প্রভৃতি রোগীর প্রয়োজনীয় কতকগুলি দ্রব্যসামগ্ৰীও কিনিয়াছে। আর আছে তার নিজের বিছানা ও বাক্স । রাখাল ফিরিয়া আসিয়াই ভাত চাহিল । সারদা ঘরের মেঝোয় আসন পাতিয়া ঠাই করিয়া রাখিয়াছিল। রাখালকে হাত পা ধুইবার জল ও গামছা আগাইয়া দিয়া ভাত বাড়িয়া আনিল । রাখাল জিজ্ঞাসা করিল-তুমি তৈরি তো সারদা ? সারদা জবাব দিল-আমি তো অনেকক্ষণ তৈরি । রাখাল আসনে বসিয়া নিঃশব্দে আহারে মন দিল । আহারের আয়োজন অতি সামান্যই । কিন্তু, তাহার অন্তরালে যে আন্তরিকতা ও সযত্ন আগ্ৰহ বৰ্ত্তমান, তাহার পরিচয় রাখলের অন্তরের অজ্ঞাত রহিলন । তৃপ্তি পূর্বক ভোজন করিয়া উঠিলে সারদা আঁচাইবার জল হাতে ঢালিয়া দিল । রাখিল জীবনে কোনও দিন। এরূপ সেবা গ্রহণে অভ্যস্ত নহে । সুতরাং ত্যাহার যথেষ্ট বাধো বাধো ঠেকিতেছিল। কিন্তু সারদার এই ঐকান্তিক সাগ্রহ যত্নে বাধা দিতে প্ৰবৃত্তি হইল না। আঁাচাইবার জল হাতে ঢালিয়া দাঁত খুটিবার খড়িকা দিল। তারপরে গামছাখানি