পাতা:শ্যামল ও কাজল - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্যামল ও কাজল মধ্যে প্ৰগতিশীল বৌদ্ধভাবাপন্ন লোকের অভাব হইবে না। এই তো আপনার প্রিয় পার্শ্বদ স্থির-বৰ্ম্মা আছে। ইহাদের মত কাহাকেও মন্ত্রী পদে নিয়োগ করুন।” । বৃদ্ধ মন্ত্রীর চোখে এক ফোটা জল আসিতেছিল, তিনি সেই উদ্যত অশ্রু দমন করিয়া স্বর্ণ পদত্ৰাণ খটু খটু করিতে রাজাকে প্ৰণামপূর্বক সেই দরবার গৃহ পরিত্যাগ করিলেন। সহসা রাজার শিরোপরি অবস্থিত মুক্তার ঝালরগুলি সান্ধ্য সমীরণে নড়িয়া উঠিল এবং এক হাজার বাতির ঝাড়টি ঠনঠুনা করিয়া অশ্রুসিক্ত সুন্দরীর চাপা কান্নার সুর তুলিয়া দরবার-গৃহে একটা দ্বিধা ও অবসাদের ভাব আনয়ন করিল। রাজা ভাবিত হইয়া পড়িলেন। সেই প্রশ্ন লইয়া রাজা গর্গের সঙ্গে দেখা করিলেন । গৰ্গ অনেক ভাবিয়া বলিলেন-“গুণীই শ্ৰেষ্ঠ, গুণীই জাতির অলঙ্কার, গুণীর বয়স বা সামাজিক বাধা নাই। যুগে যুগে দেখা গিয়াছে, গুণী সমাজে ও রাজদরবারে প্রাধান্য লাভ করিয়াছে। আমাদের কবিগুরু লিখিয়াছেন-“গুণঃ পূজা স্থানং গুণীয়ু ন চ লিঙ্গং ন চ বয়ঃ।” সেদিনও কাশ্মীরের চণ্ডাল জাতীয় নৃপতি সূৰ্য্য তিস্থায় বঁধ দিয়া দেশ রক্ষা করিয়া ছিলেন। কবি কহিলন। তঁহার কথা গৌরবের সহিত উল্লেখ করিয়াছেন। আমি জানি, অদূর অতীতে বহু গুণী নিম্ন শ্রেণী হইতে উদ্ভূত হইয়া দেশের মুখ উজ্জল করিয়াছেন ও ধৰ্ম্মগুরুর প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছেন। যাহার কপালে স্বয়ং ভগবান বিজয় চিহ্ন আঁকিয়া দিয়াছেন, তাহাকে ঠেকাইয়া রাখিবে কে ? \o