পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

》や শ্ৰীকান্ত পারি নাই। বায়ুলেশহীন, নিষ্কম্প, নিস্তব্ধ, নিঃসঙ্গ নিশীথিনীর সে যেন এক বিরাট কালীমূৰ্ত্তি । আমাদের নৌকা কোণাকুণি পাড়ি দিতেছে, এইমাত্র বুঝিয়াছি। কিন্তু পরপারের ঐ দুর্ভেদ্য অন্ধকারের কোনখানে যে লক্ষ্য স্থির করিয়া হাল ধরিয়া নিঃশব্দে বসিয়া আছে, তাহার কিছুই জানি না । এই বয়সেই সে যে কত বড় মাঝি, তখন তাহা বুঝি নাই। হঠাৎ সে কথা কহিল, কি রে শ্রীকান্ত, ভয় করে ? আমি বলিলাম নাঃ– ইন্দ্র খুসি হইয়া কহিল, এই ত চাই—সাতার জানলে আবার ভয় কিসের ! প্রত্যুত্তরে আমি একটি ছোট নিঃশ্বাস চাপিয়া ফেলিলাম—পাছে সে শুনিতে পায়। কিন্তু এই গাঢ় অন্ধকার রাত্রিতে, এই জলরাশি এবং এই দুৰ্জ্জয় স্রোতের সঙ্গে সীতার জান, এবং ন-জানার পার্থক্য যে কি, তাহা ভাবিয়া পাইলাম না। সেও আর কোন কথা কহিল না । বহুক্ষণ এইভাবে চলার পরে কি একটা যেন শোনা গেল—অস্ফুট এবং ক্ষীণ ; কিন্তু নৌকা যত অগ্রসর হইতে লাগিল, ততই সে শব্দ স্পষ্ট এবং প্রবল হইতে লাগিল। জিজ্ঞাস করিলাম, ইন্দ্র, ও কিসের আওয়াজ শোন} যায় ? সে নৌকার মুখটা আর একটু সোজা করিয়া দিয়া কহিল, জলের স্রোতে ওপরের বালির পাড় ভাঙার শব্দ । জিজ্ঞাসা করিলাম কত বড় পাড় ? কেমন স্রোত ? সে ভয়ানক স্রোত । ওঃ, তাই ত, কাল জল হয়ে গেছে, আজ ত তার তলা দিয়ে যাওয়া যাবে না। একটা পাড় ভেঙ্গে