পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীকান্ত శ్రీల আমার হয় না। তুমি মানুষের আশীর্ববাদের বাহিরে। তবে ভগবানের শ্রীচরণে তোমাকে মনে মনে আজ সঁপে দিলুম। তিনি তোমাকে যেন আপনার ক’রে নেন । ইন্দ্রকে তিনি চিনিতে পারিয়াছিলেন । র্তাহার বাধা দেওয়া সত্বেও ইন্দ্র জোর করিয়া তাহার দুই পায়ের ধূলা মাথায় লইয়। তাহাকে প্রণাম করিল। কঁদি কঁাদ হইয়া বলিল, দিদি, এ জঙ্গলে তোমাকে একলা ফেলে রেখে যেতে আমার কিছুতে মন সরচে না । আমার কি জানি কেন কেবল মনে হচ্ছে, তোমাকে আর দেখতে পাব ন! । দিদি জবাব দিলেন ন—সহসা মুখ ফিরাইয়া চোখ মুছিতে মুছিতে সেই বনপথ ধরিয় তাহার শোকাচ্ছন্ন শূন্য কুটারে ফিরিয়া গেলেন । তিনদিন পরে স্কুলের ছুটির পর বাহির হইয়াই দেখি, ইন্দ্র গেটের বাহিরে দাড়াইয়া আছে। তাহার মুখ অত্যন্ত শুষ্ক, পায়ে জুতা নাই—হাটু পর্যন্ত ধূলায় ভরা। এই অত্যন্ত দীন চেহারা দেখিয়া ভয় পাইয়া গেলাম। বড়লোকের ছেলে, বাহিরে সে একটু বিশেষ বাবু। এমন অবস্থা তাহার আমি ত দেখিই নাই—বোধ করি আর কেহও দেখে নাই। ইসারা করিয়া মাঠের দিকে আমাকে ডাকিয় লইয়া গিয়া ইন্দ্র বলিল, দিদি নেই—কোথায় চ'লে গেছেন। কাল থেকে আমি কত জায়গায় যে খুজেচি, কিন্তু দেখা পেলাম না । তোকে একখানা চিঠি লিখে রেখে গেছেন, এই নে, বলিয়া একখানা ভাজকরা হলদে রঙের কাগজ আমার হাতে গুজিয়া দিয়াই সে আর একদিকে দ্রুতপদে চলিয়া গেল।