পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R শ্ৰীকান্থ রাজলক্ষ্মী জিজ্ঞাসা করিল, কেন নাই আমাকে বুঝিয়ে দাও । একটু চুপ করিয়া থাকিয়া বলিলাম, দরিদ্র নির্বিশেষেই আমার এ মত নয়, আমার মত শুধু দরিদ্র ভদ্র গৃহস্থদের সম্বন্ধেই, এবং তার কারণও তুমি জান বলেই আমার বিশ্বাস । রাজলক্ষ্মী জিদের স্বরে কহিল, তোমার ও মত ভুল। আমারও কেমন জিদ চাপিয়া গেল। বলিয়, ফেলিলাম, হাজার ভুল হলেও তোমার মুখে সে কথা শোভা পায় না। বন্ধুর বাপ যখন তোমাদের দুই বোনকেই একসঙ্গে মাত্র বাহাত্তরটি টাকার লোভে বিয়ে করেছিল, সেদিন এখনো এত পুরানো হয়নি যে, তোমার মনে নেই। তবে না কি সে লোকটার নেহাৎ পেশা বলেই রক্ষে ; নইলে ধর, যদি সে তোমাকে তার ঘরে নিয়ে যেত, তোমার দুটি একটি ছেলেপুলে হোত-একবাব ভেবে দেখা দিকি অবস্থাটা । রাজলক্ষ্মীর চোখের দৃষ্টিতে কলহ ঘনাইয়া উঠিল, কহিল, ভগবান যাদের পাঠাতেন, তাদের তিনিই দেখতেন। তুমি নাস্তিক বলেই কেবল বিশ্বাস কর না । আমিও জবাব দিলাম, আমি নাস্তিক হই, যা হই, আস্তিকের ভগবানের দরকার কি শুধু এইজন্য ? এই সব ছেলে মানুষ করতে ? রাজলক্ষ্মী ক্রুদ্ধকণ্ঠে কহিল, না হয় তিনি না-ই দেখতেন। কিন্তু |ার মত আমি অত ভীতু নই। আমি দোর দোর ভিক্ষে করেও তাদের মানুষ করাতুম। আর যাই হোক, বা ইউলি হওয়ার চেয়ে সে वाभांद्र (Bद्ध छांव झंडा । আমি আর তর্ক করিলাম না । আলোচনাটা নিতান্ত ব্যক্তিগত এবং অপ্ৰিয় ধারায় নামিয়া আসিয়াছিল বলিয়া জানালার বাহিরে রাস্তার দিকে চাহিয়া নিরুত্তরে বসিয়া রহিলাম । আমাদের গাড়ি ক্রমশঃ সরকারী এবং বেসরকারী অফিস-কোয়াটার ছাড়াইয়া অনেক দূরে আসিয়া পড়িল। সে দিনটা ছিল শনিবার। বেলা দুটার পর অধিকাংশ অফিসের কেরাণী ছুটি পাইয়া আড়াইটার ট্রেন ধরিতে দ্রুতবেগে চলিয়া আসিতেছিল। প্ৰায় সকলের হাতেই কিছু-না- শ্ৰীকান্ত ( ২য়)-৯