পাতা:শ্রীকান্ত - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छैकाछ 8 সকলের মত নও। সত্যি বলো ত ভগবানের প্রতীক এই যে পাথরের মূৰ্ত্তি— বৈষ্ণবী হাত তুলিয়া আমাকে থামাইয়া দিল, কহিল, প্ৰতীক কী গো-উনিই যে সাক্ষাৎ ভগবান। এমন কথা আর কখনো মুখেও এনে না। নতুনগোঁসাই আমার কথায় সে-ই যেন লজ্জা পাইল বেশী। আমিও কেমন একপ্রকার অপ্ৰস্তুত হইয়া পড়িলাম, তবুও আস্তে আস্তে বলিলাম, আমি তো জানি নে, তাই জিজ্ঞেস করাচি তোমরা কি সত্যই ভাবে ঐ পাথরের মূৰ্ত্তির মধ্যেই ভগবানের শক্তি এবং চৈতন্য, তার আমার এ কথাটাও সম্পূর্ণ হইতে পারিল না, সে বলিয়া উঠিল, ভাবতে যাবে কিসের জন্যে গো, এ যে আমাদের প্রত্যক্ষ । সংস্কারের মোহ তোমরা কাটাতে পারো না বলেই ভাবে বক্তমাংসের দেহ ছাড়া চৈতন্তোব আব্ব কোথাও থাকবার যো নেই ; কিন্তু তা কেন ? আব্ব এও বলি, শক্তি আর চৈতন্যের হদিস কি তোমরাই সবখানি পেয়ে বসে আছে যে বলবে পাথরেব মধ্যে তার জায়গা হবে না ? হয় গো হয়, ভগবানেরও কোথাও থাকতে বাধা পড়ে না, নইলে তঁকে ভগবান বলতে যাবো কেন বলে তা ? যুক্তি হিসাবে কথাগুলো স্পষ্টও নয়, পূর্ণও নয়, কিন্তু এ ত তা নয়, এ তাহাব জীবন্ত বিশ্বাস। তাহার সেই জোর ও অকপট উক্তির কাছে হঠাৎ কেমনধারা থাতমাতৃ খাইয়া গেলাম ; তর্ক করিতে, প্ৰতিবাদ করিতে সাহসী হইল না, ইচ্ছাও করিল না। বরঞ্চ ভাবিলাম, সত্যই ত, পাথরই হোক। আর যাই হোক, এমন পরিপূর্ণ বিশ্বাসে আপনাকে একান্ত সমৰ্পণ না করিতে পারিলে বৎসরের পর বৎসর দিনান্তব্যাপী এই অবিচ্ছিন্ন সেবার জোর পাইত ইহারা কি করিয়া ? এমন সোজা হইয়া নিশ্চিন্ত নিৰ্ভয়ে দাড়াইবার অবলম্বন মিলিত কোথায় ? ইহারা শিশু তা নয়, ছেলেখেলার এই মিথ্যা অভিনয়ে দ্বিধাগ্ৰস্ত মন যে শান্তির অবসাদে দুদিনেই এলাইয়া