পাতা:শ্রীবৃহদ্ভাগবতামৃত.djvu/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আহা কষ্ট নিদ্রাবশে কিছু না জালিল । নেত্রের কজ্জল নিজগাত্ৰেতে মাখিল ॥ গোপীর অধর-তাম্বুলের রাগ তার। গণ্ডাদিতে লগ্ন দেখি কহে পুনৰ্ব্বার— তাম্বুলের রাগ অধরের আপনার । ইতস্তত মাখিয়াছে নহে জ্ঞাতসার । পুনঃপুনঃ পাশ্বপরিবর্তন করিয়া । কণ্ঠভূষা হার-আদি ফেলিল ছিড়িয়া । গোপিকার স্তনের কুঙ্কুম কৃষ্ণগায় । লগ্ন দেখি করে মাতা অন্ত অভিপ্রায়— যমুনানীরমুক্তিকা কুকুমের রঙ্গে । লাগিয়াছে তাহা সুনিশ্চয় কৃষ্ণ-অঙ্গে ॥ স্বানেতেও অঙ্গ হৈতে না হৈল ত্যজিত । শরীরের সহচর-মত সংলগ্নিত । চপলা বালিকাগণ করি অবধান । সন্ধ্যার সময় নাহি করাইল স্নান । তৈলাত্যঙ্গ আর শরীরেতে উদ্বর্ভন । মনোভিনিবেশে না করাইল তখন ॥ বারম্বার যশোদা কহেন এইমত । ব্ৰজকন্তাগণসকলের সমক্ষতঃ ॥ শুনি ভয় হল লজ্জা হৈয়। আবির্ভাব । লঙ্কাযুক্ত-মুখ গোপী হইলা স-ভাব ॥ ততঃপরে কৃষ্ণ নিদ্রা হইতে উঠিলা । রামের সহিত মাতা স্নান করাইলা ॥ বহু অলঙ্কারে করাইয়া বিভূষিত । করাইলা তবে ত ভোজন মুৰিহিত ॥ ভোজনাস্তে গোপিকার মুখের বার্তায় । ক্ষণেক করিলা ক্লষ্ণ বিশ্রাম তথায় । তবে ত কাননে শুভ প্রমাণ করেন । করিলেন যশোমতী যোগ্য আয়োজন ॥ বনপ্রয়াণেতে ভাবি-বিরহ-শঙ্কায় । যদ্যপি গোপিকামন পীড়িত তাহায় । তবু দিব্য সুমঙ্গলগীতের দ্বারায় । পূর্ণকুম্ভ-দধি-অাদি রাখাইলা তায় ॥ বলরামসহ এক পীড়ার উপরে । বসাইয়া কৃষ্ণে মাতা বেশ-ভূষা করে। বনের উচিত সৰ্ব্ব অঙ্গেতে ভূষণ। পরাইলা আর সে ঔষধপ্রকরণ ॥ মণি ব্যাখ্রনখ আর বিশল্যকরণী । রক্ষণডোর মন্ত্ৰ পঢ়ি করিলা রক্ষণী ॥ বৃদ্ধ গোপী আর বৃদ্ধ ব্রাহ্মণীদ্বারায়। শুভ আশীৰ্ব্বাদ বহু করাইলা তায় । 》 ঐযুহম্ভাগবতামৃত כט)כ প্রহস্তের তর্জনী অঙ্গুলী নাসিকায় । ধরাইয়া শুভযাত্রা করাইলা মায় ॥ মধ্যাহ্নের সময়েতে করিতে ভোজন । শিকায় বাধিয়া দ্রব্য করিলা অর্পণ । শ্ৰীদামাজি-বালকের হস্তে তাহা দিয়া । নিকলিলা গো-অগ্রেতে বেণু বাজাইয়া ॥ সেইকালে কৃষ্ণ-সখী গোপের কুমার । উচিতত্ব-প্রাপ্ত সদা সখ্যতায় তার ॥ নিজনিজ ভোজ্য সবে করিয়া গ্রহণ । ঐক্লষ্ণের নিকটেতে করি আগমন ॥ যুথেযুথে সকলেতে মিলি কৃষ্ণসঙ্গে । বাহির হইলা ব্রজ হৈতে গোষ্ঠে রঙ্গে । সখাসং কৰ্ভু বংশী শিঙ্গা বা কখন। নানা বাদ্য বাজাইয়া করে বিললন । সখাগণ লৈল ছত্র পাদুকা চামর। ধ্বজ ভোগ্য পেয়াসন কন্দুক বিস্তর ॥ তাল-মৃদঙ্গাদি বহু ক্রীড়ার সাধন । স্বচ্ছন্দে খেলিতে সবে করিলা গ্রহণ ॥ গায় নাচে তারা কভু হর্ষে স্তব করে। চলিল রামের সহ কানন-গোচরে। অগ্রে বলদেব আমি স্বরূপ পশ্চাতে । সখীগণ চতুৰ্দ্দিগে শোভা নানা তাতে ॥ গোষ্ঠযাত্রা দেখিবার লাগি করি ছল। আইলেন সেইস্থানে গোপিকাসকল ॥ কুষ্ণের বিরহদুঃখ সহিতে না পারে। আকৰ্ষিত প্রেমপাশে আল্যা তথাকারে ॥ গোপীমূখ নিরীক্ষণ করি ভাবোদয়ে। কৃষ্ণের মুখেতে ঘৰ্ম্ম হৈল সে-সময়ে । ঘৰ্ম্মযুক্ত মুখপদ্ম দেখি বালকের। স্নেহেতে ঝরয়ে ক্ষীর মাতার স্তনের ॥ মার্জন করিলা হস্তে অঞ্চলেতে আর । পিছে আল্যা পর্য্যস্ত ব্রজের বহিদ্বার ॥ কৃষ্ণের কথনে গৃহে করিতে গমন। গ্ৰীবা ফিরাইয়া মাতা করিয়া দর্শন। দুই তিন পদ গিয়া ফিরি পুনৰ্ব্বার। পুত্রের নিকটে আইলেন ব্যগ্রাকার ॥ তাম্বুল সাজিয়া কৃষ্ণমুখে হস্তে আয়। সমপিয়া চলিলেন গৃহে পুনৰ্ব্বার ॥ গ্রীবা ফিরি পুত্রমুখ দেখি পূৰ্ব্বমত । অতিবেগে ব্যগ্র পুন হইলা আগত ॥ কিছু মিষ্টফলাদিক আর মিষ্টজল । পথে পুত্রে করাইয়া ভোজন সকল।