পাতা:শ্রীরায় রামানন্দ - রসিকমোহন বিদ্যাভূষণ.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Siss শ্ৰীরায় রামানন্দ । একত্র অনেক বিষয়ের অনুশীলনে কোনটাই অনুশীলিত বা অভ্যস্ত হয়। না । সুতরাং এই দশটাকেই শাস্ত্রকার প্রারস্তররূপ অঙ্গ বলিয়া নির্দিষ্ট করিয়াছেন । ইহার সর্বপ্রথমেই গুরুপদাশ্ৰয়ের কথা উল্লিখিত হইয়াছে। এই দৃশ্য জগতের অতি সামান্য বিষয়ের জ্ঞানলাভ করিতে হইলেই যখন গুরুপদাশ্রয় ভিন্ন তৎজ্ঞানলাভের উপায়ান্তর নাই, এই অবস্থায়। অতীন্দ্ৰিয় অপার্থিব সচ্চিদানন্দময় তত্ত্বের সাধন ভজনে প্ৰবৃত্ত হইতে হইলে গুরুপদাশ্ৰয় কী দৃশ প্রয়োজন, তাহা অতি সহজেই বুঝা যাইতে পারে । যিনি রসায়ন-বিজ্ঞানে লন্ধবিদ্য, কৃতকৰ্ম্মা, সুতরাং সুসিদ্ধ, রসায়নবিজ্ঞান সম্বন্ধীয় অতীন্সিত ফললাভ করিতে হইলে তাহার প্রক্রিয়াগুলি তিনিই অপরকে বুঝাইয়া দিতে পারেন, আপরে পরিবে কেন ? অতএব গুরুপদাশ্রয় অতি প্ৰয়োজনীয়। গুরুর লক্ষণ শ্ৰীহরিভক্তিবিলাসে লিখিত হইয়াছে। শাসুনির্দিষ্ট সদগুরুর নিকট কৃষ্ণদীক্ষা গ্ৰহণ করিয়া শিক্ষালাভ করিতে হইরে । “তস্মাৎ কৃষ্ণদীক্ষাদি-শিক্ষণম” এই কথার ব্যাখ্যায় শ্ৰীল শ্ৰীজীৰ গোস্বামিপাদ লিখিয়াছেন "কৃষ্ণ দীক্ষাদীীতি দীক্ষাপূর্বক শিক্ষণমিতি।” কিন্তু ভক্তিসন্দর্ভে দীক্ষাগুরু ও শিক্ষাগুরুর যথেষ্ট পার্থক্য-বিচার পরিলক্ষিত হয়। শ্ৰীচৈতন্যচরিতামৃতের প্রথমেই এই দুই প্রকার গুরুর উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। শাস্ত্ৰনির্দিষ্ট গুরুপদাশ্ৰয়ের সৌভাগ্য লাভ হইলে রাহু গুরুর প্রয়োজন অপ্রাসঙ্গিক হইয়া উঠে ! কেননা, সদগুরুর পদাশ্রয়ই শাস্ত্ৰাভিমত। ধিনি দীক্ষাগুরু হইবেন, তঁাহার শিক্ষণ দিবার সামর্থ্য নাই এ আশঙ্কা মনে উদিত হইলে সেই গুরুর গৌরবহানিরূপ অপরাধে লিপ্ত হইতে হয়। তবে ব্যাবহারিক জগতে শিক্ষার ভিন্ন ভিন্ন স্তরে আমাদিগকে ভিন্ন ভিন্ন গুরুর শিক্ষা গ্ৰহণ করিতে হয়। ইহা স্বীকাৰ্য্য। শ্ৰীবিত্বমঙ্গল, চিস্তামণি বেশ্যাকেও গুরু বলিয়া তাহার জয়জয়কার করিলেন, শ্ৰীপাদ সোমগিরি তদীয় দীক্ষাগুরু বলিয়া স্বীকৃত;