শ্ৰীশ্ৰীহরিলীলামৃত। — >W o w পাগল কহিছে, নাও দেও পেচে, ঠাকুরকে দেখি, নৌকা ঘাটে রাখি, যদি মোরে ভালবাস । দৌড় দিয়া চলে যায়। বাহিয়া যাইতে, একজন সাতে, প্রভু হরিচাদে, হেরি মনোসাধে, দেহ নৈলে নিজে এস ॥ নৌকা সেচে দিল, বৈটাখানা নিল, পাগল উঠিল নায় । ঠাকুর দেখিতে, নৌকা বেয়ে যেতে, রায়চাঁদ সীতে যায় ॥ তরণী বাহিছে, বেগে চালা'য়েছে, বিক্রমশালী বিশাল । যাও যাও বলে, বাও বাও বলে, পাগল সেচিছে জল । জোরে খোচ দেও, জোরে বাও নাও, যদি দেহ জোর ছেড়ে । জোর দিলে কম, আমি তোর যম, মুণ্ড ফেলাইব ছিড়ে । মরি কিম্ব বঁচি, আছি কি না আছি, না জানিয়া মানি এত । যা হও তা হও, নৌকা বেয়ে যাও, এ নাও চালাও দ্রুত ॥ যত বীহে নাও, তত বলে বাও, - বিলম্ব নাহিক সহে । রায়চাঁদ বায়, যত শক্তি গায়, কাল ঘৰ্ম্ম দেহে বহে ॥ নিশ্বাস প্রশ্বাস, - ঘন ঘন শ্বাস, মরণ প্রশ্বাস প্রায় । ডা’ন হাতে জল, ফেলেছে পাগল, বাম হাতে নাও বায় ॥ ডালির উপরে, বক্ষঃ রাখি জোরে, বাম হাত জলে দিয়া । জল টানি টানি, চলিল অমনি, যায় তরণী বাহিয়া ॥ অৰ্দ্ধ পথে গিয়া, • পড়িল শুইয়া, বলে এক বেয়ে চল । নৌকা চালাইবি, এমতে বাহিবি, নৌকায় না উঠে জল ৷ রায়চাদ জোরে, বাহে বেণভরে, নৌকায় না উঠে বারি । উতরিল৷ শিঙ্গা, পাগলের ডিঙা, অকূলে তরিল তরী। অমনি পদে লোটায় ॥ রহে দণ্ড চারি, ঠাকুরে নেহারি, ঠাকুর জিজ্ঞাসা করে। আমারে দেখিলে, এলে কি না এলে, যুধিষ্ঠির রঙ্গ ঘরে ॥ কহিছে গোলোক, হইয় পুলক, ত্রিলোক পালক হরি। যথা তথা রহ, নাহিক সন্দেহ, ' উৎসাহে শ্ৰীপদ হেরি ॥ আপনি সবার, জীবন আধার, যান সবাকার ঠাই । আসি পুলকেতে, আপন দেখিতে, এ বাড়ীতে আসি নাই ॥ কহিল যখন, ঠাকুর তখন, ক্রোধে রক্ত জব চক্ষু । এত বড় হলি, এ বাড়ী না আলি, কি কহিলি ওরে মুখ"। ছিলেন বসিয়া, ঠাকুর রুধিয়া, দুরন্ত রাগের সাত । ঠাকুর তখনে, গোলোক বদনে, মরিল চপটাঘাত ॥ তখনে গোলোক, অন্তরে পুলক, বাহিরে পাবক স্যায়। এক লম্ফ দিয়া, ঠাকুরে লঙ্ঘিয়া, ঘরের বাহিরে যায়। গোলোক দৌড়িয়া, ঘাটেতে আসিয়া, অবিলম্বে নাও ছাড়ি । রায় চাদে ফেলে, আসিয়া উঠিলে, কুবের বিশ্বাস বাড়ী ॥ এ দিকে ঠাকুর, ক্রোধিত প্রচুর, রায় চাদে ডেকে কয় । কোথায় ঠাকুর, পেলি এত দুর, হারে দুষ্ট দুরাশয় ॥ শুনিবারে পাই, আমি যথা যাই, ও বলে আসেন। তথা । বুঝে দেখ মনে, আমারে কি মানে, কেন কহে হেন কথা ॥
পাতা:শ্রীশ্রীহরি লীলামৃত.djvu/১৬৯
অবয়ব