পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৮ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ততীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড মৌরাপুর ও ইন্দানগরের সম্বন্ধ সূচক বংশোল্লেখ শ্রুতি সুখকর বলিয়াই যে এইরূপ যুগানাম প্রদানের পদ্ধতি প্রচলিত, কেবল তাহা নহে; এইরূপ যুগানামাত্মক স্থানে কোনরূপ সম্বন্ধ থাকার কথা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি। অনুসন্ধান করিলেই এই সম্বন্ধের সংবাদ পাওয়া যাইতে পারে। প্রতাপগড়-জফরগড়ের ন্যায় ইন্দানগর মৌরাপুরে ভূস্বামীর স্বত্ব সম্পর্ক স্পষ্টতঃ লক্ষিত হয়। ইন্দাইপাল নামে কোন এক ব্যক্তির নামে ইন্দানগরের নাম হইয়াছিল বলিয়া কথিত আছে; মহুরাপুর বা মৌরাপুর উক্ত ইন্দাইপালেরই অধিকার ভুক্ত ছিল। ইন্দাইপালের কৰ্ম্মচারী যাদব দাস বিশ্বাসঘাতকতা পূৰ্ব্বক ইহা নিজ নামে বন্দোবস্ত করিয়া লওয়ার জনশ্রুতি অদ্যাপি শুনা যায়। সম্রাট শের শাহের সময়ে ইন্দানগর মণ্ডল বংশীয় জমিদারদের হস্তগত হয়। নারায়ণ মণ্ডল ইটার রাজা সুবিদনারায়ণের কৰ্ম্মচারী ছিলেন, তাহা পূৰ্ব্বে বলা গিয়াছে। ইন্দানগর পরগণার প্রায় বারপণ অংশ এযাবৎ উক্ত চৌধুরী বংশের২৭ অধিকার আছে। ইন্দানগরের পশ্চিমদিকে একটি মোকাম আছে। এই মোকামে একজন সিদ্ধ ফকির একটা প্রস্তর লইয়া সৰ্ব্বদা খেলা করিতেন। চৌধুরী বংশীয় জনৈক ব্যক্তিকে একদা তিনি উহা প্রদান করিয়া বলিয়াছিলেন যে, যতদিন সে প্রস্তর তাহাদের হস্তচু্যত না হইবে, ততদিন সম্পত্তির ধ্বংস নাই; যত দিন প্রস্তরটি বৰ্দ্ধিত হইবে, একহস্তে কন্দুক ক্রীড়ন যোগ্য ক্ষুদ্র প্রস্তরটি এক্ষণে তদ্রুপ আকৃতি বিশিষ্ট হইয়াছে। চৌধুরী বংশীয়দের স্থাপিত “চৌধুরী বাজার" শ্রীমদন মোহন বিগ্রহ, মন্দির এবং প্রাচীন দীর্ঘিকাদি তাহাদের কীৰ্ত্তি চিহ্ন । উক্ত পরগণার ১নং হইতে ১০নং পৰ্য্যন্ত তালুকগুলি এই বংশীয় ব্যক্তিবর্গের নামে পরিচিহ্নিত। এই দশটি মূল তালুক হইতে পরে আরও অকেন উত্তর শ্রীহট্টের বৈদ্যকায়স্থাদি বংশ বৃত্তান্ত, তুলনায় পাই নাই বলিলেই হয়; সুতরাং এইরূপ দীনভাবে ইহা শেষ করিতে হইতেছে । শ্রীহট্টের কোন স্থান কায়স্থ অধ্যুষিত নহে? কোন বংশে ২/১টি কীৰ্ত্তি কথা নাই? তাহা পাইলে এ অধ্যায়টি অন্যরূপ হইত। ১৭. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশে উল্লেখিত বিময় বিশেষের অনুরূপ উদাহরণ প্রদর্শনের জন্য এই বংশাবলী ৩য় ভাগে প্রকাশ করিতে প্রতিশ্রুত ছিলাম, ও পরিশিষ্টে তাহা প্রদত্ত হইবে । যাহাদের নামে তালুকের নামাদি হইয়াছে, তাহাও প্রদর্শিত হইবে।