পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/২১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায় : লংলা, সাতগাও বালিশিরা প্রভৃতি স্থানের ব্রাহ্মণ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২১৭ পুণ্ডরীকাক্ষ পুত্র-বিয়োগে ব্যথিত হইলেন এবং বাকসিদ্ধ সন্ন্যাসীর অভিপ্রায়ানুসারে চন্দ্রশেখরকে সুবিদরায়ের একত্রবাস ও তাহার শাস্ত্রীয় ব্যাপার সম্পাদনাৰ্থে ব্যবস্থাদি দান করিতে দিলেন। সন্ন্যাসী রাত্তম গিরির নামানুসারে সেই স্থান "নৰ্বতম", তৎপরে “নর্তন" নামে খ্যাত হয়। চন্দ্রশেখরের পুত্র মথুরানাথ এবং রামভদ্র প্রভৃতি। মধুরানাথের পুত্রের নাম রঘুনাথ বিদ্যালঙ্কার। ইহার পুত্র "দুলাভট” ও “জগন্নাথ শিরোমণি"। দুলাভট বৈদান্তিক পণ্ডিত ছিলেন, ইহার নামে এক সিদ্ধ নিষ্কর তালুক আছে। নবাব নোয়াজিস মোহাম্মদ খার প্রদত্ত সনন্দে দৈনিক চারিপণ কৌড়ি তাহার ভরণ পোষণ জন্য নির্দিষ্ট হয়, তন্মধ্যে “দুইপণ সদর কাছারীতে ও দুইপণ দক্ষিণ ভাগের কৰ্ম্মচারিয়ানের বেতন হইতে" দিবার ব্যবস্থা হয়। ইহার পুত্র গঙ্গাধরের নামেও ব্রহ্মত্র ভূমি আছে। o পুত্র হয়; তন্মধ্যে রামজীবনের নামীয় একখানা সনন্দে চারিহাল মদতমাস ভূমি প্রাপ্তির কথা জ্ঞাত হওয়া যায় ৩ এই সনন্দোল্লিখিত ভূমি দাতা নবাব নুরউল্লা খা বাহাদুর। রামজীবনের পুত্র রাধাকান্ত চক্ৰবৰ্ত্ত ও হরিকৃষ্ণ খা। রাধাকান্তের নামে চারিখানা সনন্দ আছে।৪ রাধাকান্তের পুত্র হরিদাস ও ঘনশ্যাম, হরিদাসের নামে দুই খানা সনন্দ আছে জানা যায়। রাধাকান্তের মধ্যম ভ্রাতা রামচন্দ্রের পুত্রের নাম রাজেন্দ্র, ইহার নামে দশসনা তালুক আছে। তাহার অপর ভ্রাতার নাম শ্রীচন্দ্র, ইহার দুই পুত্র, তাহাদের নাম সানন্দরাম ও রামানন্দ । সানন্দরাম এই বংশে অতি প্রধান ও কৃতী পুরুষ ছিলেন, শ্রীহট্টের নবাবগণ হইতে তিনি অনেক ভূমি ব্ৰহ্মত্র প্রাপ্ত হন । তত্ৰত্য টোলের অধ্যাপক তাহার প্রপৌত্র শ্রীযুক্ত রোহিনী চন্দ্র তর্কচূড়ামণি মহাশয় সানন্দরামের নামীয় নয়খানা সনন্দের নকল সহ তদ্বংশবিবরণ প্রেরণে আমাদের সহায়তা করিয়াছিলেন ॥৫ বিশারদ বংশ এই বংশের অন্যশাখা বংশ বলিয়া খ্যাত । বলভদ্র বিশারদ হইতেই এ শাখার এই খ্যাতির উৎপত্তি। বলভদ্রের দুইপুত্র, তন্মধ্যে একের নাম রঘুপতি, অপরের নাম রমাপতি পঞ্চানন । রঘুপতির পুত্র মহাদেব, তৎপুত্র উমাকান্ত, বিশারদ উপাধি ভূষিত বিখ্যাত পণ্ডিত ছিলেন। বিশারদ বংশে অনেক পণ্ডিতের উদ্ভব হয়। উমাকান্তের মধ্যম পুত্রের নাম রামকৃষ্ণ, তাহার পুত্র বিজয়কৃষ্ণ; ইহার চারি পুত্রই উপাধি ভূষিত ছিলেন, তাহাদের নাম হরিশ্চন্দ্র বিদ্যারত্ন, রামশরণ ত_আমাদের সংগৃহীত উক্ত সনদের নং ৯৪ ৷ এই বংশীয়গণ যে দীর্ঘজীবী ছিলেন, এসকল সনদেব উল্লেখিত কালালোচনায় তাহা বুঝা যায়। ৪. (১) সনন্দ নং ৯২নং দ্বারা ১১ জলুসে নবাব সৈয়দ মোহাম্মদ আলী খাঁ হইতে তিনি লংলাব নৰ্ত্তন গ্রামে ৬া2h ভূমি মদত মাস প্রাপ্ত হন। (২) ৯৩নং সনদে নবাব হরকিষুণ দাস মনসুর উলমুলক হইতে ২ জলুসে তিনি ঐ এক স্থানেই ২, ১। ২॥১১w ভূমি ব্ৰহ্মত্র লাভ করেন, ১২০০ সালে তাহার মৃত্যু হয়; অতএব স্পষ্টতঃ ইহাকে সুদীর্ঘজীবী দেখা যাইতেছে। অপর সনন্দ সমূহের বিবরণ দেওয়া বাহুল্য বলিয়া পরিত্যক্ত হইল। ৫. এই সকল সনন্দ যথাযথোভাবে উদ্ধৃত করা বাহুল্য বোধে এস্থলে মাত্র চারিখানি সনদের মৰ্ম্ম দেওয়া গেলঃ (১) নবাব নজীব আলী খাঁর মোহরাঙ্কিত সনদে তিনি দৈনিক%পণ কৌড়ি পাইতেন । (২) নবাব নোয়াজিস মোহাম্মদ খাঁর মোহরাঙ্কিত সনদে তিনি “বারকাহন কৌড়ি সরকারী নজর ছলামী হইতে ব্ৰহ্ম উত্তরের নিয়মে" বাৎসরিক পাইতেন । (৩) নবাব মোহাম্মদ আলী খার মোহরাঙ্কিত সনদে তিনি বার্ষিক ২৫ কাহন কৌড়ি পাইতেন। (৪) উক্ত নবাব প্রদত্ত অন্য এক সনন্দে তিনি আরও কতক ব্ৰহ্মত্র পাইয়াছিলেন।