পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৫৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বংশ ও জীবন বৃত্তান্ত’ অতিরিক্ত খণ্ড-কাছাড়ের কথা [উপক্রমণিকা] শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশে কাছাড়ের ভৌগোলিক ও ঐতিহাসিক বৃত্তান্ত দেওয়া গিয়াছে, উত্তরাংশেও তাই কাছাড়ের বংশ ও জীবন বৃত্তান্ত দেওয়া কৰ্ত্তব্য মনে করিয়াছি। কিন্তু তদৰ্থে তথ্য সংগ্রহের জন্য একাধিকবার বিশেষভাবে বিজ্ঞাপন দিয়া এবং নানা স্থানে চিঠিপত্র লিখিয়াও বিশেষ কিছু সংগ্ৰহ করিতে পারা যায় নাই—মাত্র তিনটী বংশ কাহিনী সংগৃহীত হইয়াছে। ১.—উদায়বন্দের দেশমুখ্য বংশ কথা ও ২.— হাইলা কান্দির ব্রাহ্মণবংশ কথা ও ৩.–হাইলাকান্দির কায়স্থ চৌধুরী বংশ কথা । তাহাই প্রকাশিত হইল। উদারবন্দের দেশমুখ্য বংশ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত উত্তরাংশ ৩য় ভাগ ২য় খণ্ডের ২য় অধ্যায়ে (১৫৯ পৃঃ) চাপঘাটের দেশমুখ্য বংশবৃত্তান্ত বর্ণন প্রসঙ্গে বলা হয়—“এই দেশমুখ্যবংশে শম্ভুনাথের জন্ম।” দেশমুখ্য বংশীয় শম্ভুনাথের জন্মস্থান কিন্তু চাপঘাট নহে, কাছাড় জেলার অন্তর্গত উদারবন্দের দুর্গানগর গ্রামে শম্ভুনাথ জাত হন। শম্ভুনাথেব চরিত্র প্রণিধানযোগ্য। কিন্তু অগ্রে তাহার পূৰ্ব্বপুরুষের বিবরণ সংক্ষেপে বলিতেছি। মহারাষ্ট্র-ব্রাহ্মণ-বর্গের এক সম্প্রদায়ের পদবি “দেশমুখ্য” । আমরা যে বংশের বিবরণ বলিতেছি, ইহাদেরও পূৰ্ব্বপুরুষ যে এক সময় তদেশবাসী ছিলেন, ইহা অনুমান করা যাইতে পারে। কিন্তু কখন কি কারণে তাহারা এ অঞ্চলে আগমন করেন, তাহা জানা যায় না। প্রথমে এই বংশীয়গণ শ্রীহট্টের ইটাবাসী ছিলেন, ইটা হইতে ঐ বংশীয় বসুদেব কাছাড়রাজ হরিশ্চন্দ্ররায়ণের সময়ে তৎকর্তৃক শ্যামা ও কাচাখান্তি দেবীর পূজক নিযুক্ত হইয়া কাছাড় গমন করেন। তাহার পুত্র জয়কৃষ্ণ দেশমুখ্য উদারবন্দের সামাজিক বিচার নিম্পত্তি করিবার ভার প্রাপ্ত হন। জয়কৃষ্ণের পুত্র সোণারাম ১২৩১ সালে পিতৃপদ প্রাপ্ত হন। সে সনন্দে সোণারাম ঐ পদ প্রাপ্ত হন, তাহাতে তাহাদের বিচাৰ্য্য কৰ্ত্তব্য বিষয়ে বিবিধ বিষয়ের উল্লেখ আছে; যথাঃ “দফে জায় মোকদমা—১ অপালন গোবধ আদি--১ অজ্ঞাত সংসর্গ পশ্চাদজ্ঞাত—১ শ্ৰাদ্ধ, পুর্নবিবাহ ও চতুর্থ বিবাহ পতিত হওয়া—১ পুত্রে মাতা পিতা জেঠা খুড়া ও ভ্রাতা শ্বশুর আদিকে মন্দ-বাক্য বলিলে—১ ক্রোধেতে মোহেতে স্বামী স্ত্রীকে মাতা ভগ্নি বলিলে এবং স্ত্রী স্বামীকে পিতা বলিলে—” ” ইত্যাদি সোণারামের দুই পুত্র রসরাজ ও শম্ভুনাথ । শম্ভুনাথের কথা ১৮৩০ খৃষ্টাব্দে শম্ভুনাথের জন্ম হয়। শম্ভুনাথ শৈশবে ঘটনাবশে গুরুতর আঘাত প্রাপ্ত হইয়া পঙ্গু হইয়া পড়েন; অপরের সহায়তা ব্যতীত চলা ফেরা করিতে, কি গৃহ হইতে বহির্গত হইতে