পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ( পূর্বাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিল্পোৎপন্ন দ্রব্য । ] শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত । $5 চাপঘাট, লংলা, রাজনগর, ও লস্করপুরে উৎকৃষ্ট পালকী প্রস্তুত হয়। শ্ৰীহট্ট, করিমগঞ্জ ও পঞ্চখণ্ডে উৎকৃষ্ট কেদারা ক্রয় করিতে পাওয়া যায়। ঢাকা দক্ষিণে কাষ্ঠের খাঞ্চা বা বাট ( কাষ্ঠ নিৰ্ম্মিত থালা ) এবং চাড়ী নামক কাষ্ঠপাত্র প্রস্তুত হয় । *s শ্ৰীহট্ট, লাতু ও করিমগঞ্জে উৎকৃষ্ট কাষ্ঠপাছক ( খড়ম ) প্রস্তুত হয়। কাষ্ঠ পাদুকার জন্য কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত বলুয়া এবং শিশুদের জন্য, কাষ্ঠনিৰ্ম্মিত সুরঞ্জিত খেলান শ্রীহট্টের বিশেষ কাষ্ঠ-শিল্প । খেলানা প্রস্তুত বিষয়ে স্বত্রধরগণ বিশেষ নৈপুণ্য প্রদর্শন করে। ইহার পালিশ কাৰ্য্যে ও রঙ্গের বাহারে সকলেরই মন মোহিত হয়। সাধারণতঃ ২৫টি খেলানার সেট ১০ মূল্যে বিক্রয় হয়। বলুয়, এবং দাবী ও পাশাখেলার গুটিতেও রং দেওয়া হয়। তদ্ব্যতীত শ্রীহট্টে হুকার নারিচা, নারিকেল কুরানি প্রভৃতি নানা দ্রব্য প্রস্তুত হইয়া থাকে। লাউড়ের প্রস্তুত হকার নল প্রসিদ্ধ । সদরে কাঠের লাঠি ও খেলার বেট প্রস্তুত হয়। তরফের কচুয়াদি গ্রামের স্বত্রধর উৎকৃষ্ট বেহালা প্রস্তুত করিতে পারে।* শ্রীহট্টে মণিপুরী জাতীয় স্বত্রধরেরা কাষ্ঠের কার্যে, বিশেষতঃ গৃহ নিৰ্ম্মণাদিতে বিশেষ নৈপুণ্য প্রকাশ করিয়া থাকে। কাষ্ঠের রথ নিৰ্ম্মাণে স্বত্রধরগণ যথেষ্ট শিল্প চাতুৰ্য্য প্রদর্শন করিয়াছে ; নবিগঞ্জ ও আখাইল কুড়ার রথ তাহার দৃষ্টান্ত স্থল। পূৰ্ব্বে সুতারের কার্য্য জাতিগত ছিল, এখন শিক্ষাগত হইয়া দাড়াইয়াছে। সুত্রধরের বেতন সাধারণতঃ দৈনিক আট আনা হইতে বার আনা পর্য্যন্ত হইয়া থাকে।

  • সদরের মটাই কোম্পানীর প্রস্তুত বেট ও লাঠি প্রসিদ্ধ ।

কচুয়াদির স্বত্রধর নিমাইচাঁদ বংশানুক্রমে বেহালা প্রস্তুত বিষয়ে সুশিক্ষিত। ইন্দেশ্বরের রাধাকিশোর সিংহ পাখাটানার কল আবিষ্কার করিয়াছেন ; পঞ্চখণ্ডের এক ব্যক্তি কাষ্ঠ-নিৰ্ম্মিত সূক্ষ্ম বেত্র-ফাড়া কল প্রস্তুত করিয়াছেন। তত্ৰত্য জীবিপিনচন্দ্র দে কাঠের উপর উৎকৃষ্ট স্থায়ী নামের মোহর, চিত্র-ব্লক ইত্যাদি প্রস্তুত করিতে সমর্থ, তাহা কোন অংশেই কলিকাতা নিৰ্ম্মিত রবারষ্টাম্প প্রভৃতি হইতে নিকৃষ্ট নহে , ইনি ওয়াটারপেইন্টিং চিত্র অঙ্কিত করিতে পারেন। وا