পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় ভাগ-প্রথম খণ্ড 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ১০০ “বিশ্বনাথের বাজার” তাহার নাম রক্ষা করিতেছে। বিশ্বনাথের পুত্র ব্ৰজনাথ স্থানীয় মহাপ্রভুর আখড়া স্থাপন করেন;তৎপুত্র বৈকুণ্ঠনাথ, তাহার পুত্র বরদানাথ একজন সুকবি। জানাইয়ার দত্ত বংশ এই দত্তবংশীয়গণ আপনাদিগকে চক্রদত্ত বংশজ বলিয়া পরিচয় প্রদান করেন। লাখাই ও সপ্তগ্রামের বিবরণে চক্রদত্ত বংশকথা বিস্তারিত রূপে বর্ণিত হইবে। এস্থলে বলা অপ্রাসঙ্গিক নহে যে ঘড়য়াবাসী কেশবরায় দত্তচৌধুরীর জ্যেষ্ঠপুত্র পৈতৃক বাসস্থান ত্যাগ করিয়া বনভাগ আগমন করেন ও পূৰ্ব্বোক্ত বিশ্বনাথ চৌধুরীর ভগিনীকে বিবাহ করিয়া এই স্থানবাসী হন, তৎপুত্র জয়গোবিন্দ দত্ত, তাহার পুত্রেব নাম হরগোবিন্দ:ইহার পৌত্রগণ জীবিত আছেন। পরগণা-রেঙ্গা পুরকায়স্থ বংশ চতুর্থ অধ্যায়ে বেঙ্গ পরগণার ব্রাহ্মণবংশ বর্ণনে বিশারদবংশের স্থাপয়িতা মহেশ্বর, কেন পরিজন ও বাসস্থান পরিত্যাগ বেঙ্গবাসী হইয়াছিলেন, তাহা বলা হয় নাই; তাহা বলিতে গেলেই তত্রত্য পুরকায়স্থ বংশের উল্লেখ করিতে হয়। রেঙ্গার পুরকায়স্থগণ এক প্রাচীন বংশীয়, তাহারা বলেন যে, তাহাদের আদি পুরুষ অৰ্জ্জুনবাম দাস দক্ষিণারাঢ় হইতে এদেশে আগমন করেন। এ বংশের অনেক কীৰ্ত্তিই আছে, তন্মধ্যে “হাট পুরুষোত্তম”—পুরুষোত্তম দাস স্থাপন করিয়াছিলেন। মোগল নামে ঢাকা বাসী জনৈক মোসলমানেব সঠিত ইহার বন্ধুত্ব ছিল, মোগল যখন এদেশ হইতে চলিয়া যান, তখন তাহার নামের স্মৃতিরক্ষার্থ তদীয অভিপ্রায় মতে তিনি বন্ধুর নামে নিজের স্থাপিত স্বনামীয় বাজাবটিকে “মোগলের বাজাব” নাম দান করেন। এই কথাটা সামান্য হইলেও কম উদারতার কথা নহে। এই বংশীয় জনৈক ব্যক্তি বিশারদেব শিষ্য ছিলেন এবং তিনিই তাহাকে রেঙ্গায় আনিয়া স্থাপন করেন। ইংরেজ আমলের প্রথমে এই বংশের কেহ কেহ পাটওয়ারি নিযুক্ত হন; বৰ্ত্তমান সময়েও অনেক উচ্চপদস্থ রাজকৰ্ম্মচারী এই বংশের গৌরব রক্ষা করিতেছেন। যুগ্ম নাম ইতিপূৰ্ব্বে আমরা যে সকল বংশের বিবরণ উল্লেখ করিয়াছি, রেঙ্গা-বরায়া প্রভৃতি স্থানে তদ্ব্যতীত বহুতর উল্লেখযোগ্য কায়স্থ বংশীয়ের বাস আছে। আমরা সে সমস্ত বংশ বৃত্তান্ত প্রাপ্ত হই নাই। রেঙ্গা-বরায় ইত্যাদি স্থানবাচক যুগ্ম নামে উভয় স্থানে একটা সম্বন্ধের ভাবই সূচীত হয়। পাশাপাশি দুইটা পরগণা বা গ্রামের নামোল্লেখ সাধারণতঃ লোকে একত্র করিয়া থাকে; উদাহরণ যথা—— খানাকুল কুলীনগর, জিরাট-বলাগড়, টাকী-শ্রীপুর ইত্যাদি। শ্রীহট্টের যথা—সরাইল-বেজোড়া, তরফবাণিয়াচঙ্গ, প্রতাপগড়-জফরগড়; এইরূপে ইন্দানগর-মৌরাপুর নামও যুগ্মভাবে কথিত হয়। মেীরাপুর ও ইন্দানগরের সম্বন্ধ সূচক বংশোল্লেখ শ্রীতি সুখকর বলিয়াই যে এইরূপ যুগ্মনাম প্রদানের পদ্ধতি প্রচলিত, কেবল তাহা নহে;এইরূপ যুগ্মনামাত্মক স্থানে কোনরূপ সম্বন্ধ থাকার কথা পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি। অনুসন্ধান করিলেই এই সম্বন্ধের