পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায় লংলা, সাতগাও বালিশিরা প্রভৃতি স্থানের ব্রাহ্মণ বিবরণ লংলা পরগণার ভরদ্বাজ গোত্রীয়গণ সাম্প্রদায়িক ভরদ্বাজ গোত্রীয়দের আদি স্থান লংলা। মহারাজ স্বধৰ্ম্ম প্রদত্ত তাম্রপত্রোল্লিখিত “লংলাই কুকিস্থান’ই লংলা পরগণা বলিয়া খ্যাত হইয়াছে। এই স্থানে প্রথমে ভরদ্বাজগোত্রোৎপন্ন যিনি বাস করেন, তাহার নাম বাসুদেব। বাসুদেবের পুত্রের নাম হরিহরাচাৰ্য্য। লংলায় ভরদবাজ গোত্রীয়গণ ইহাকেই প্রসিদ্ধ জ্যোতিষ গ্রন্থ প্রণেতা বলিয়া নির্দেশ করেন। হরিহরের পুত্র পুণ্ডরীকক্ষ। ইহার বহুপুত্র ছিল, তন্মধ্যে প্রথম পুত্রের নাম প্রভাকর; র্তাহার পুত্রের নাম চন্দ্রশেখর। সন্ন্যাসীর নামে গ্রাম পত্তন পুণ্ডরীকক্ষ তখনও জীবিত আছেন, একদা নরোত্তম গিরি নামক জনৈক প্রভাবান্বিত সন্ন্যাসী, সুবিদরায় নামে এক অনুগত কায়স্থ সহ তথায় উপস্থিত হন। নরোত্তম সুবিদরায়কে সেই স্থানে অবস্থিতি করিতে আদেশ দিয়া অন্যত্র চলিয়া যাইতে ইচ্ছা করেন। সেই নিৰ্জ্জন স্থানে ব্রাহ্মণ ব্যতীত কি প্রকারে কায়স্থ-সন্তান বাস করিবে? করযোড়ে সুবিদরায় ইহা জানাইলেন। কিছুই সৰ্ব্বদশী সন্ন্যাসীর অগোচর থাকিবার নহে, তিনি পুণ্ডরীকক্ষের সে স্থানে অবস্থিতির বিষয় জ্ঞাত হইলেন ও তৎসকাশে সমুপস্থিত হইয়া, তদীয় পুত্ৰগণের একজনকে সুবিদরায়ের “বিষয়” গ্রহণের জন্য অনুরোধ করিলেন। পুত্ৰগণের সকলেই অস্বীকৃত হইলেন, পৌত্র চন্দ্রশেখর কোন উত্তর না দিয়া মৌনাবলম্বনে রহিল। সন্ন্যাসী বড়ই বিরক্ত হইলেন। কথিত আছে যে, সন্ন্যাসীর অভিসম্পাতে র্তাহার সকল পুত্রই দিবসত্রয় মধ্যে মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছিলেন। পুণ্ডরীকাক্ষ পুত্র-বিয়োগে ব্যথিত হইলেন বেং বাকসিদ্ধ সন্ন্যাসীর অভিপ্রায়ানুসারে চন্দ্রশেখরকে সুবিদরায়ের একত্রবাস ও র্তাহার শাস্ত্রীয় ব্যাপারে সম্পাদনাৰ্থে ব্যবস্থাদি দান করিতে দিলেন। ১. শ্রীহট্রেব ইতিবৃত্ত ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৫ম অধ্যায় দেখ। S. “ੱਣਿ: প্রদীপ” নামক প্রসিদ্ধ জ্যোতিষ গ্রন্থ প্রণেতা হরিহরাচার্য শ্রীহট্টের এক প্রধান জ্যোতিষী ছিলেন। ইনি কোন বংশ উজ্জ্বল করিযাচিলেন, নিশ্চিত কপে বলিতে পাবি না। নৰ্ত্তনবাসী ভরদ্বাজ গোত্রীয়গণ আমাদিগকে যে বিবরণ প্রদান করিয়াছেন, তল্লিখিত মত উপায়ে ব্যক্ত করা হইয়াছে। ইটার কাত্যাফন গোত্রীয় সাম্প্রদায়িকগণ ইহাকে সেই গোত্রোপৎস্ন ভারতবিখ্যাত শিরোমণির বৃদ্ধপিতামহ বলিয়া উল্লেখ করেন। বিষ্ণুপুর-বাসী বাৎস্য গোত্রীয়গণ একথাব ঘোরতর প্রতিবাদ করয়িা “জ্যোতিঃ প্রদীপ” প্রণেতা জ্যোতিষী হরিরাচাৰ্য্যকে তদেশীয “গণক” জাতীয় লোক বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। এসকল মতবাদ হইতে সত্য নিষ্কাশন সহজ নহে।