পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬৫ উপসংহার 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত অনুমান করেন; লাউড়ে ইহার নিবাস ছিল, এবং তথায় ঐ বংশ থাকার কথা শুনা গিয়া থাকে।” এই সময়ে আরো এক ব্যক্তি এইরূপেই শ্ৰীমহাপ্রভুর একান্ত ভক্ত হইয়া উঠেন ইহার নাম জগন্নাথ আচাৰ্য্য ছিল। ১৪ পুনঃ নবদ্বীপ শ্ৰীমহাপ্রভু নবদ্বীপে পৌছিয়া একটু বিশ্রামান্তরই মাকে প্রবোধ দেন। মা পুত্রমুখ দর্শনে ও র্তাহার মুখে তত্ত্বকথা শুনিয়া বিগত ক্লেশ হইলেন, তাহার পরে শ্ৰীমহাপ্ৰভু সশিষ্য গঙ্গাস্নানে গমন করেন, স্নানান্তে আহারাদি করিয়া প্রতিবেশীবর্গ সহ সম্মিলিত হন। অনেক কথাবাৰ্ত্তার হাসিয়া হাসিয়া বঙ্গদেশী লোকদিগকে তাহাদের দেশীয় কথার অনুকরণে কথা বলিয়া হাস্যামোদ করিয়াছিলেন; যথা—চৈতন্য ভাগবতে ঃ– “বঙ্গদেশী বাক্য অনুকরণ করিয়া। বাঙ্গলের কদর্থেন হাসিয়া হাসিয়া।” কিন্তু ব্যঙ্গের মাত্রাটা শ্রীহট্টবাসিগণের প্রতি অধিক ছিল, যথা তত্ৰৈব— “বিশেষ চালেন প্ৰভু দেখি শ্রীহট্টীয়া। কদর্থেন সেই মত বচন বলিয়া। ক্রোধে শ্রীহট্টীয়গণ বলে হয় হয়। তুমি কোন দেশীলোক কহত নিশ্চয়?” ইত্যাদি শ্ৰীগৌরাঙ্গ পূৰ্ব্ববঙ্গ হইতে আসিয়া এই রঙ্গ আরম্ভ করেন। শ্রীহট্টাদি অঞ্চলের কথা শিখিয়া গিয়া, তদনুকরণে র্তাহাদিগকে বিদ্রুপ করিলে, র্তাহারা যে বড় উত্যক্ত হইত, তাহা নহে; কেননা তিনি স্বয়ংই শ্রীহট্টীয়ার সন্তান, এই কথাটি তাহারা তাহাকে স্মরণ করাইয়া দিতেও ভুলিত না; তাহারা নিমাইকে এ সম্বন্ধে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করিয়া ঠেকাইত।* স্বদেশীয় ভক্তগণসহ শ্ৰীমহাপ্রভু যে এসব রঙ্গ করিতেন, তাহা এক্ষণে শুনিতে বড়ই সুখ বোধ হয়, তাই একটু বিস্তৃত ভাবে বলিলাম। বিষ্ণুপ্রিয়া যাহা হউক, শচীদেবী পুনৰ্ব্বার পুত্রের বিবাহ দিতে ইচ্ছা করিলেন এবং রাজ পণ্ডিত সনাতন মিশ্রের কন্যা বিষ্ণুপ্রিয়ার সহিত পুত্রের বিবাহ দিলেন। এদিকে নিমাই পণ্ডিত পূৰ্ব্বের ন্যায় বিদ্যারসে মত্ত হইলেন—অধ্যাপনা করিতে লাগিলেন। পূৰ্ব্ববঙ্গে যেমন শিক্ষাদানের সহ কীৰ্ত্তন প্রচার চলিত— ১৩ শ্রীযুক্ত চৈতন্যচরণ দাস প্রকাশিত শ্ৰীকৃষ্ণচৈতন্যোদয়াবলী গ্রন্থের ভূমিকা দ্রষ্টব্য। ১৪ “জগন্নাথ আচাৰ্য দুবর্বাসা মহামতি। চৈতন্যের শাখা যার শ্রীহট্টে বসতি।”—বৈষ্ণবাচারদর্শন। ১৫. “পিতা মাতা আদি করি যতেক তোমার। বল দেখি শ্রীহট্টে না হয় জন্ম কার?”—চৈতন্য ভাগবত।