পাতা:শ্রীহরিনাম - ভক্তিবিনোদ ঠাকুর.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্ৰীহরিনাম প্ৰাকৃত বস্তুই ইন্দ্ৰিয়গ্ৰাহ। কৃষ্ণনামাদি অপ্ৰাকৃত, তাহা কখনই ইন্দ্ৰিয়গ্ৰাহ নন। তবে যে, নাম জিহবাতে প্ৰকাশিত হয়, সে কেবল আত্মার অপ্রাকৃত আনন্দ, তত্তদুপযোগি ইন্দ্রিয়ে স্মৃৰ্ত্তিমাত্র । ভক্ত যেসময় আত্মার অপ্রাকৃত জিহ্বায় কৃষ্ণনাম উচ্চারণ করেন, তখন ঐ উচ্চারিত পরমতত্ত্ব প্ৰাকৃত জিহবায় আবির্ভূত হইয়া নৃত্য করিতে থাকেন। আনন্দ-দ্বারা হাস্য, স্নেহ-দ্বারা ক্ৰন্দন, শ্ৰীতি-দ্বারা নৃত্য যেরূপ প্ৰাকৃত রসেইন্দ্ৰিয়-পর্যন্ত ব্যাপ্ত, তদ্রুপ অপ্রাকৃত-ব্লসে জিহবা-পৰ্য্যন্ত কৃষ্ণনাম-রাসের ব্যাপ্তিই হইয়া থাকে। প্ৰাকৃত জিহবায় কৃষ্ণনামের জন্ম হয় না । সাধনকালে যে নামের অভ্যাস, তাহা বাস্তবিক নাম নয়, তাহাকে নামাভাস বলা যায়। নামাভাসে জীবের ক্রমোন্নতিবিধিক্রমে অনেক স্থলে অপ্ৰাকৃত নামে রুচি হইয়াছে। বাল্মীকি ও অজামিলের জীবন-চরিত্র আলোচনা করিলে ইহা জ্ঞাত হওয়া যাইবে । জীবের অপরাধক্রমে নামে রুচি হয় না। অপরাধ শূন্য হইয়া যিনি কৃষ্ণনাম, গ্রহণ করেন, তঁাহার হৃদয়ে চৈতন্যরাসবিগ্ৰহরূপ অপ্ৰাকৃত হরিনামের উদয় হয়। অপ্রাকৃত-নামোদয় হইলে হৃদয় উৎফুল্প হইয়া চক্ষে জলধারা ও দেহে সাত্ত্বিকাৰিকার প্রতীয়মান হইয়া থাকে। অতএব ভাগবতে এইরূপ কথিত হইয়াছে “তদশ্মসারং হৃদয়ং বতেদং যদংগৃহমানৈৰ্হিরিনামধেয়ৈ: । ন বিক্রিয়ে৷তাৰ্থ যদা বিকারো নেত্ৰে জলং গাত্ররূহেষু হর্ষঃ।।* জীব যখন হরিনাম গ্ৰহণ করেন, তখন তঁাহার হৃদয় অবশ্য বিকৃত --(সাত্ত্বিকবি করে যুক্ত) হইবে, নেত্ৰে জলধারা বাহির হইবে এবং রোমাঞ্চ ' হইবে। যিনি কৃষ্ণনাম উচ্চারণ করিয়াও এরূপ বিকার লাভ না করেন তঁাহারন্থদয় অপরাধ-দ্বারা অত্যন্ত কঠিন হইয়াছে। “ ০ নিরপরাধে হরিনাম গ্ৰহণ করা সাধকের নিতান্ত কৰ্ত্তব্য । অতএব অপরাধ বজ্জন করিতে গেলে অপরাধ কত প্রকার, তাহা জানা আবশ্যক। +5