বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা - সঞ্জীব দেবলস্কর (২০২৩).pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীতৎপুরুষনামা
১৫

সোনাপুর পরগনার সাতকরাকন্দিতে। ওখানকার জমিদার সোনামিঞাঁ চৌধুরি যারপরনাই আহত হলেন। এ কী দুর্মতি হল মহামান্য হেড়ম্ব রাজসভা পারিষদের।

 —এ আপনাদের অন্যায় কার্য। আমি তো জীয়ন্তে খ্রিস্টান মুলুকে সামিল হইতে পারি না। হুজুর! আপনাকে আমি পাঁচটি হাতি, দশটি ঘোড়া এবং তিনখানা বন্দুক দিব। নসিব ফিরিলে মূল্য দিবেন। সুদ ইসলামে হারাম, ইচ্ছা হইলে কেবল মূল দিবেন। এত সহজে খ্রিস্টান রাজত্ব মানিতে পারি না।

 সোনাই নদীপথে রওয়ানা দিয়ে জাটিঙ্গা পৌঁছোবার আগেই পত্রসহ তাঁর দূত ইংরেজ সিপাইর হাতে ধরা পড়ল। অভিসন্ধি ফাঁস হয়ে যাওয়াতে অপ্রস্তুত অবস্থায় কোম্পানির সিপাইর হাতে বন্দি হলেন প্রতাপশালী রাজা সোনামিঞাঁ চৌধুরি। জাটিঙ্গা পাড়ে এই প্রতিরোধী বার্তা আর পৌঁছোতে পারল না। সমতল কাছাড়ে স্বাধীন হেড়ম্ব রাজ্যের প্রদীপ জ্বালানোর অবশিষ্ট আর কেউ রইল না।

 ওদিকে মাহুর নদীর তীরে পার্বত্য কাছাড়ে বিদ্রোহী সেনাপতি তোলারাম রাজ্যের ভেতর লুটতরাজ চালিয়ে যেতে থাকল। ইংরেজশক্তি এই এলাকাকে স্বতন্ত্র এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে হেড়ম্ব মুলুক থেকে আলাদা করে দিল। তাঁদের দৃষ্টি এখন নব অধিকৃত কাছাড় রাজ্যে।

 কাছাড়ের শেষ নৃপতি গোবিন্দচন্দ্র ছিলেন স্বভাব কবি, প্রশাসনে উদাসীন এবং ভোগবিলাসে মত্ত। সিংহাসনে বসে প্রথমেই তিনি বিধবা ভ্রাতৃবধূ মণিপুর রাজকন্যা ইন্দুপ্রভাকে বিবাহ করে প্রজা এবং পারিষদদের বিরাগভাজন হলেন।

 বিপিনচন্দ্র শৈশব থেকেই তাঁর জেঠিমা, কাকিমাদের মুখে শুনে আসছেন এ রানি ছিলেন রূপেগুণে অসামান্যা, নৃত্যগীতে পারদর্শিনী। অবশ্য এ রানি সম্বন্ধে বিদ্যাবিনোদ ইতিপূর্বে বন্ধু ভুবনমোহন বিদ্যার্ণব