মহিম বলিল “বাবা পাঠিয়ে দিলেন তোমাকে ডাক্তে। এখনই একবার চণ্ডী বাবুর বাড়ীতে যেতে হবে। পাড়ার সকলেই তোমার জন্য সেখানে অপেক্ষা করছেন।”
শ্যামা ঠাকুরাণী একটু অভিমানের সুরে বলিলেন “আমার জন্য অপেক্ষা, কেন? আমি গরিব বামুণের বিধবা মানুষ; গায়ের এক কোণে পড়ে আছি; আমার আর তত্ত্বতলাসের দরকার কি? হাঁ, যদি রমার মত জমিদার হতাম, তা হোলে তোরাই দিনের মধ্যে পচিশ-বার খোজ নিতি। বল্গে যা, আমার এখন সময় নেই। আমার যাবারই বা দরকার কি? তারকের ছেলেটার অসুখ, তাই দেখ্তে এসেছিলাম। আমি যেতে পাচ্ছিনে। তোরাই আছিস্, তোরাই এখন গাঁয়ের প্রধান হয়েছিস্। তোরাই যা হয় কর গিয়ে, আমার খোজ কেন?” এই বলিয়া শ্যামা ঠাকুরাণী নিজ গৃহের দিকে দুই তিন পা বাড়াইলেন।
মহিম বলিল “ও কি কথা বল্ছ পিসিমা! তুমি না হ’লে কি আমাদের চলে। কা’ল রাত্রিতেই যখন পাড়ার সকলে একত্র হলেন, তখন আমিই বলেছিলাম, এখনই শ্যামা পিসিকে খবর দেওয়া হোক্। তাতে সকলেই বল্লেন যে, বুড়ো মানুষ, এই সারাদিন খেটেখুটে সন্ধ্যার সময় ক্লান্ত হয়ে বাড়ী গিয়েছেন, এখন আর তাঁকে কষ্ট দিয়ে কাজ নেই। কা’ল সকালে তাঁকে ডেকে এনে একটা ব্যবস্থা করলেই হবে। তাইতেই ত তোমাকে তাঁরা ডাক্তে পাঠিয়েছেন।”