বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

সার্ব্বজনিক চাপ ছাড়া আর কোন ঐক্য ছিল না। নিজেদের মধ্যে সন্দেহ, অবিশ্বাস, কলহের অন্ত ছিল না। এই সমস্ত বিভিন্ন গোষ্ঠিকে ঐক্যবদ্ধ করিয়া একদিকে যেমন জাতীয়দল গঠন করিবার চেষ্টা চলিতেছিল অন্যদিকে তাহার পাশাপাশি সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনেরও সূচনা হইয়াছিল।

 ১৮৫৪-৫৬ সালের ক্রিমিয়ান্ যুদ্ধে রাশিয়ার শোচনীয় পরাজয়ের পর জাতীয় স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দেশে একটা তীব্র প্রতিবাদ দেখা দিয়াছিল। প্রত্যেক যুদ্ধেই জনসাধারণের চিত্ত গভীরভাবে আলোড়িত হয়। পশ্চিম ইউরোপীয় প্রধান জাতিগুলির ক্ষিপ্র উন্নতি ও বিস্তারের তুলনায় জার-শাসিত রাশিয়া বর্ব্বরতা অজ্ঞতা ও ধর্মান্ধ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ছিল। ফ্রান্স ও ইংলণ্ডের রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার অনুকরণ প্রয়াসী রাশিয়ান্ শিক্ষিত মধ্যশ্রেণীর মধ্যে সংস্কার আন্দোলন দেখা দিল। এই সংস্কারপ্রয়াসী মধ্যশ্রেণীকে খুসী করিবার জন্য ১৮৬০ হইতে ১৮৬৯ সালের মধ্যে রুশ গভর্ণমেণ্ট কতকগুলি সংস্কার প্রবর্ত্তিত করিলেন। কৃষিক্ষেত্রে দাসপ্রথা লুপ্ত হইল, মিউনিসিপ্যাল স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তিত হইল, বিচার বিভাগেরও কিছু সংস্কার সাধিত হইল। যদিও ঐ সকল সংস্কারে দেশময় একট! হৈ চৈ পড়িল, তথাপি দেখা গেল প্রচলিত ব্যবস্থার বিশেষ কোন পরিবর্তন হয় নাই। দৃষ্টান্তস্বরূপ কৃষিক্ষেত্রে দাসপ্রথা লোপের কথাই ধরা যাউক। উহার পশ্চাতে দীর্ঘস্থায়ী বৈষম্যের প্রতিকারের মনোবৃত্তি ছিল না। প্রথম উদ্দেশ্য অর্থনৈতিক লাভ, দ্বিতীয় উদ্দেশ্য বড় বড় জোত্দার জমীদারের স্বার্থ, তৃতীয়তঃ রাজনৈতিক কারণ। স্বয়ং জার পর্য্যন্ত বলিয়াছিলেন, উপর হইতে কৃষকদিগকে মুক্তি দিবার কারণ এই যে তাহারা যেন নীচের দিক হইতে মুক্তির দাবী করিয়া আন্দোলনের সাফল্যের গর্ব্বে অহঙ্কত না হইয়া উঠে। রাষ্ট্রের সংস্কারের