ভূমিকা
ষ্ট্যালিনের জীবন রাশিয়ার শ্রমিক আন্দোলন ও বিপ্লবের সহিত অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ষ্ট্যালিনের কর্ম্মবহুল জীবনে নাটকীয় ঘটনার অত্যন্ত অভাব। সেই কারণে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন ও রাশিয়ার কৃষক শ্রমিকের অভ্যুত্থানের ইতিহাসের সহিত জড়িত করিয়াই এই জীবন আমাকে আলোচনা করিতে হইয়াছে। সমসাময়িক জগতের রাষ্ট্রক্ষেত্রে ষ্ট্যালিন এক বিরাট বিগ্রহ। অথচ তাঁহার সম্বন্ধে আমরা অতি অল্পই জানি। এই শ্রেণীর মানুষের জীবনের একটা স্বচ্ছ পরিচয় লেখনীমুখে ফুটাইয়া তোলা কঠিন ব্যাপার। আমি অকপটে স্বীকার করিতেছি যে এই গ্রন্থ তাঁহার সম্যক পরিচয় নহে। আজ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের গতিপথে নাৎসী জার্মানী সোভিয়েট রাশিয়াকে আক্রমণ করার পর এই প্রশ্নই মুখ্য হইয়া উঠিয়াছে যে, মনুষ্যজাতির ভবিষ্যৎ কি? মানব মুক্তির উপাসকগণের আত্মবলিদান কি কোন নূতন আশা সান্ত্বনা বহিয়া আনিবে, না নৈরাশ্যের অন্ধকারে মনুষ্য-সভ্যতা বহুযুগ আবৃত থাকিবে? সোভিয়েট রাশিয়ার বিশ্বকোটী নরনারী কি রুধিরস্রোতে ভাসিয়া যাইবে? না শোণিতস্নাত হইয়া পুনরায় তাহারা নব নির্ম্মাণশালায় মনুষ্য জাতির ভবিষ্যৎ গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করিবে?
এই প্রশ্ন আসিতেছে সমাজের সর্ব্বনিম্ন স্তর হইতে। সমাজের উপরের দিকের পাণ্ডিত্যাভিমানী মৃত জগতের স্তাবকগণ এই প্রশ্ন শুনিয়া সচকিত ও উদ্বিগ্ন। পৃথিবীর সকল দেশের বুদ্ধিজীবিরা এই প্রশ্নের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করিতেছেন, কূটনীতিকগণ কৌশলপূর্ণ ভাষার আবরণে