বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:ষ্ট্যালিন - সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষ্ট্যালিন

যুদ্ধকে মার্কসীয় বিপ্লবীর দৃষ্টিভঙ্গী দ্বারা বিচার করিতেছে। “দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক মৃত, সুবিধাবাদীদের দ্বারা নিহত। সুবিধাবাদ ভুলুণ্ঠিত হউক। তৃতীয় আন্তর্জাতিকের পতাকা উত্তোলিত হউক,”—১৯১৪ সালের নভেম্বর মাসের এই ঘোষণার সাড়ে চারি বৎসর পরে লেনিনের প্রতিভাপ্রসূত তৃতীয় আন্তর্জ্জাতিক বাস্তবরূপ পরিগ্রহ করে।

 প্রতিক্রিয়াশীল জার গভর্ণমেণ্টের এবং অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধতা সত্ত্বেও বলশেভিকদল ধীরে ধীরে রাশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করিতে লাগিল। কিন্তু সুপরিচিত বলশেভিক নেতারা প্রায় সকলেই সাইবেরিয়ায় নির্ব্বাসিত হইলেন। লেনিন তাঁহার নির্ব্বাসিত সহকর্ম্মীদের লইয়া ইউরোপ হইতে প্রচার কার্য চালাইতে লাগিলেন। জার্ম্মান সোশ্যালিষ্ট প্রতিপত্তিশালী নেতা কাউট্‌স্কি পোল-জার্ম্মান নেতা রোজা লুক্সেম‍্বার্গ প্রভৃতি দ্বিতীয় আন্তর্জ্জাতিকের নেতাগণ সমাজতন্ত্রবাদের সহিত জাতীয়তাবাদ মিশাইয়া মার্কসবাদ বিরোধী প্রচাবকার্য্যে রত হইলেন। ১৯১৬ খৃষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে কিন্থলে সমাজতন্ত্রী সম্মেলনে লেনিন দেখিলেন, অধিকাংশ ইউরোপীয় সমাজতন্ত্রবাদী প্রতি-বিপ্লবী হইয়া দাঁড়াইয়াছেন। রাশিয়ান দলের কেন্দ্রীয় সমিতির নামে লেনিন বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করিলেন, তিনি মার্কস্-এঙ্গেল প্রদর্শিত পন্থা হইতে ভ্রষ্ট হইবেন না। গত বিশ বৎসর ধরিয়া তিনি যে বিপ্লবের স্বপ্ন দেখিতেছেন রাশিয়ার জনসাধারণ তাহাকে বাস্তবে রূপ দিবে। ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলিতে জনসাধারণ গভর্ণমেণ্টের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিবে এইরূপ আশাও তিনি পোষণ করিতেন। অন্ততঃ তিনি বিশ্বাস করিতেন, রাশিয়ার জনসাধারণ যদি সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সাধন করিতে পারে তাহার প্রতিক্রিয়া এশিয়া ও ইউরোপে সুদূর প্রসারী হইবে।

৪৮