পাতা:সচিত্র কৃত্তিবাসী রামায়ণ -নয়নচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/৪৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেহ পৃষ্ঠে উঠে, কেহ কিল মারে ঘাড়ে। কার সাধ্য কুম্ভকর্ণেরণমধ্যে পাড়ে। বানর ধরিয়া বীর চিবাইছে দাতে। মুখ সংবরিতে নারে, রক্ত পড়ে স্রোতে ॥ সহস্ৰ সহস্র কপি সাপটিয়া ধরে। পাতাল সমান মুখ, তাহে লয়ে পোরে। নাক-কাণের পথ যেন ঘরের দুয়ার। তাহা দিয়া কপি সব বেরয় আবার | লাফ দিয়া কুম্ভকৰ্ণ ধরে অঙ্গদেরে। মূচ্ছিত করিল তারে গদার প্রহারে। হাতে গদ কুম্ভকৰ্ণ অতি ভয়ঙ্কর। গদার বাড়িতে মারে অনেক বানর। শতবলী ভূমে প’ড়ে যায় গড়াগড়ি । হনুমানের বুকেতে মারিল গদা-বাড়ি। গদা খেয়ে হনুমান উঠিল আকাশে। আকাশে থাকিয়া গাছ-পাথর বরিষে ॥ ঘন বরিষণে শব্দ হইল মহান । কুম্ভকর্ণের গদা ভাঙ্গি কৈল খান খান। গদা গেল, কুম্ভকৰ্ণ লাগিল ভাবিতে । লাফ দিয়া হনুমানে ধরিল ত্বরিতে। হনুমানের বুকে মারে বজের চাপড়। চাপড়ের ঘায়ে হনু করে ধড়ফড় । ভূমিতে পড়িল যদি পবন-নন্দন। রণ ছাড়ি পলায় যতেক কপিগণ । বড় বড় বীর পলায় ভঙ্গ দিয়া রণে। কুম্ভকৰ্ণে দেখি কেহ স্থির নহে মনে । ঐরামের সৈন্যদলে লাগিল তরাল। কুম্ভকৰ্ণরণ-কথা গাছে কৃত্তিবাস। [णकांकांस সুগ্ৰীব-কর্তৃক কুম্ভকর্ণের নাসা কর্ণচ্ছেদন । কুম্ভকৰ্ণ কপিগণে ধরি সবে গিলে। দেখিয়া সুগ্ৰীব গেল সংগ্রামের স্থলে ৷ শালবৃক্ষ উপাড়িল পবনের বেগে । গাছ-হাতে দাণ্ডাইয়া কুম্ভকৰ্ণ আগে ॥ বড় বড় বানর মারিলি বাছের বাছ। মোর ঘা সহ রে বেটা, মারি শালগাছ ॥ কুম্ভকৰ্ণ বলে, আমি বিধাতার নাতি। এড় দেখি শালবৃক্ষ, বুঝি রে শকতি ॥ এড়িলেক শালবৃক্ষ পৰ্ব্বত-প্রমাণ । কুম্ভকর্ণের গায়ে ঠেকে হৈল খান খান ॥ ছি ছি বলি কুম্ভকৰ্ণ দিল টিটকারী। এই মুখে খাও বেটা কিষ্কিন্ধ্যানগরী। ভাল ছিল বালি-রাজা, বীর মধ্যে গণি । কোন মুখে রাখিবে তাহার রাজধানী। দুই লক্ষ রাক্ষসে যে জাঠা গাছ বয়। হেন জাঠী কুম্ভকৰ্ণ হাতে তুলে লয় ৷ আশী কোটি মণ লৌহে জাঠার গঠন। দশ হাজার হাত জাঠা দৈর্ঘ্যে নিরূপণ। কুম্ভকৰ্ণ এড়ে জাঠা দিয়া হুহুঙ্কার। স্বৰ্গ-মৰ্ত্ত্য-পাতালে লাগিল চমৎকার। দেখিয়া স্বগ্ৰীব বীর না ভাবে মনেতে । সিংহনাদ করি জাঠা ধরে বাম হাতে ॥ ভাঙ্গিলেক জাঠা যেন পড়িল ঝঞ্চনা। ত্রিভুবনে যত লোক পাসরে আপনা। কুম্ভকৰ্ণ কোপেতে পৰ্ব্বতে দিল টান । এক টানে আনিল পৰ্ব্বত একখান ॥ এড়িল পৰ্ব্বত গোটা বিপরীত কোপে । পড়িল স্বগ্রীব রাজা পৰ্ব্বতের চাপে ॥