সবাই মোরে করেন ডাকাডাকি,
কখন শুনি পরকালের ডাক?
সবার আমি সমানবয়সি যে
চুলে আমার যত ধরুক পাক।
সেকাল
আমি যদি জন্ম নিতেম কালিদাসের কালে
দৈবে হতেম দশম রত্ন নবরত্নের মালে,
একটি শ্লোকে স্তুতি গেয়ে রাজার কাছে নিতাম চেয়ে
উজ্জয়িনীর বিজন প্রান্তে কানন-ঘেরা বাড়ি।
রেবার তটে চাঁপার তলে সভা বসত সন্ধ্যা হলে,
ক্রীড়াশৈলে আপন-মনে দিতাম কণ্ঠ ছাড়ি।
জীবন তরী বহে যেত মন্দাক্রান্তা তালে,
আমি যদি জন্ম নিতাম কালিদাসের কালে।
চিন্তা দিতেম জলাঞ্জলি, থাকত নাকো ত্বরা,
মৃদুপদে যেতেম যেন নাইকো মৃত্যু জরা।
ছ’টা ঋতু পূর্ণ ক’রে ঘটত মিলন স্তরে স্তরে,
ছ’টা সর্গে বার্তা তাহার রইত কাব্যে গাঁথা।
বিরহদুখ দীর্ঘ হত, তপ্ত অশ্রুনদীর মতো
মন্দগতি চলত রচি দীর্ঘ করুণ গাথা।
আষাঢ় মাসে মেঘের মতন মন্থরতায় ভরা
জীবনটাতে থাকত নাকো একটুমাত্র ত্বরা।
অশোক-কুঞ্জ উঠত ফুটে প্রিয়ার পদাঘাতে,
বকুল হ’ত ফুল্ল প্রিয়ার মুখের মদিরাতে।
প্রিয়সখীর নামগুলি সব ছন্দ ভরি করিত রব
রেবার কূলে কলহংসকলধ্বনির মতো।