পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪১৪
ক্ষণিকা

মোরা নব-নবীন ফাগুন-রাতে নীলনদীর তীরে
কোথা যাব চলি অশোক-বনে, শিখিপুচ্ছ শিরে।
যবে দোলার ফুলরশি
দিবে নীপশাখায় কষি,
যবে দখিন-বায়ে বাঁশির ধ্বনি উঠবে আকাশ ঘিরে,
মোরা রাখাল মিলে করব মেলা নীলনদীর তীরে।

আমি হব না ভাই, নববঙ্গে নবযুগের চালক,
আমি জ্বালাব না আঁধার দেশে সুসভ্যতার আলোক।
যদি ননীছানার গাঁয়ে
কোথাও অশোক-নীপের ছায়ে
আমি কোনো জন্মে পারি হতে ব্রজের গোপবালক,
তবে চাই না হতে নববঙ্গে নবযুগের চালক।


বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মীঃ

কোন্ বাণিজ্যে নিবাস তোমার কহো আমায় ধনী,
তাহা হলে সেই বাণিজ্যের করব মহাজনি।
দুয়ার জুড়ে কাঙাল বেশে ছায়ার মতো চরণদেশে
কঠিন তব নূপুর ঘেঁষে আর বসে না রইব।
এটা আমি স্থির বুঝেছি, ভিক্ষা নৈব নৈব।
যাবই আমি যাবই ওগো, বাণিজ্যেতে যাবই।
তোমায় যদি না পাই তবু আর-কারে তো পাবই।

সাজিয়ে নিয়ে জাহাজখানি, বসিয়ে হাজার দাঁড়ি,
কোন্ নগরে যাব দিয়ে কোন্ সাগরে পাড়ি।
কোন্ তারকা লক্ষ্য করি কূলকিনারা পরিহরি
কোন্ দিকে যে বাইব তরী অকুল কালোনীরে।