পাতা:সঞ্চয়িতা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৮২
শেষ সপ্তক

সভার লোকে বললে,
‘এ যে তোমার আবাঁধা বেণীর বাণী—
বন্দিনী সে গেল কোথায়?’
আমি বলি, ‘তাকে তুমি পারবে না আজ চিনতে;
তার সাতনলী হারে আজ ঝলক নেই,
চমক দিচ্ছে না চুনি-বসানো কঙ্কণে।’
ওরা বললে, ‘তবে মিছে কেন?
কী পাব ওর কাছ থেকে?’
আমি বলি, ‘যা পাওয়া যায় গাছের ফুলে—
ডালে-পালায় সব মিলিয়ে।
পাতার ভিতর থেকে তার রঙ দেখা যায় এখানে সেখানে,
গন্ধ পাওয়া যায় হাওয়ার ঝাপ্‌টায়।
চার দিকের খোলা বাতাসে দেয় একটুখানি নেশা লাগিয়ে
মুঠোয় ক’রে ধরবার জন্যে সে নয়,
তার অসাজানো আটপহুরে পরিচয়কে
অনাসক্ত হয়ে মানবার জন্যে
তার আপন স্থানে।’


তুমি প্রভাতের শুকতারা

তুমি প্রভাতের শুকতারা
আপন পরিচয় পাল্‌টিয়ে দিয়ে
কখনো বা তুমি দেখা দাও
গোধূলির দেহলিতে,
এই কথা বলে জ্যোতিষী।
সূর্যাস্তবেলায় মিলনের দিগন্তে
রক্ত অবগুণ্ঠনের নীচে
শুভদৃষ্টির প্রদীপ তোমার জ্বালো