এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
মেঘনাদবধ কাব্য
হে আকাশ, শুনিয়াছি তুমি শব্দবহ,
(আরাধিনু মনে মনে) এ দাসীর দশা
ঘোর-রবে কহ যথা রঘুচূড়ামণি,
দেবর লক্ষ্মণ মোর, ভুবন-বিজয়ী।
হে সমীর! গন্ধবহ তুমি; দূত-পদে
বরিনু তোমায় আমি, যাও ত্বরা করি,
যথায় ভ্রমেন প্রভু। হে বারিদ! তুমি
ভীমনাদী, ডাক নাথে গম্ভীর নিনাদে।
হে ভ্রমর! মধুলোভি, ছাড়ি ফুলকুলে
গুঞ্জর নিকুঞ্জে, যথা রাখবেন্দ্র বলী,
সীতার বারতা তুমি; গাও পঞ্চস্বরে
সীতার দুঃখের গীত, তুমি মধু-সখা
কোকিল! শুনিবে প্রভু, তুমি হে গাইলে
এইরূপে বিলাপিনু, কেহ না শুনিল।
“চলিল কনক-রথ; এড়াইয়া দ্রুতে
অভ্রভেদী গিরিচূড়া, বন, নদ, নদী,
নানাদেশ। স্ব-নয়নে দেখেছ, সরমা!
পুষ্পকের গতি তুমি; কি কাজ বর্ণিয়া?
“কতক্ষণে সিংহনাদ শুনিনু সম্মুখে
ভয়ঙ্কর। থরথরি আতঙ্কে কাঁপিল
বাজিরাজি, স্বর্ণ-রখ চলিল অস্থিরে।
দেখিনু মেলিয়া আঁখি, ভৈরব-মূরতি