এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৪
মেঘনাদবধ কাব্য
ও প্রতিমা, নিত্য যথা, আইলে রজনী,
সরসী হরষে পূজে কৌমুদিনী-ধনে।
বহু ক্লেশ, সুকেশিনি, পাইলে এ দেশে।
কিন্তু নহে দোষী দাসী।” কহিলা সুস্বরে
মৈথিলী;—“সরমা সখি, মম হিতৈষিণী
তোমা সম আর কি লো আছে এ জগতে?
মরুভূমে প্রবাহিণী মোর পক্ষে তুমি,
রক্ষোবধু! সুশীতল ছায়ারূপ ধরি,
তপন-তাপিতা আমি, জুড়ালে আমারে।
মূর্ত্তিমতী দয়া তুমি এ নির্দ্দয় দেশে।
এ পঙ্কিল জলে পদ্ম! ভুজঙ্গিনী-রূপী
এ কাল-কনক-লঙ্কা-শিরে শিরোমণি।
আর কি কহিব, সখি! কাঙ্গালিনী সীতা,
তুমি লো মহার্হ রত্ন! দরিদ্র, পাইলে
রতন, কভু কি তারে অযতনে, ধনি!”
নমিয়া সতীর পদে, কহিলা সরমা;—
“বিদায় দাসীরে এবে দেহ, দয়াময়ি!
না চাহে পরাণ মম ছাড়িতে তোমারে,
রঘুকুল-কমলিনি! কিন্তু প্রাণপতি
আমার, রাঘব-দাস; তোমার চরণে
আসি কথা কই আমি, এ কথা শুনিলে
রুষিবে লঙ্কার নাথ, পড়িব সঙ্কটে।”