এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
মেঘনাদবধ কাব্য
এক পুত্ত্রশোকে তুমি আকুলা, ললনে!
শত পুত্ত্রশোকে বুক আমার ফাটিছে
দিবানিশি! হায়, দেবি, যথা বনে বায়ু
প্রবল, শিমূলশিম্বী ফুটাইলে বলে,
উড়ি যায় তূলারাশি, এ বিপুল-কুল-
শেখর রাক্ষস যত পড়িছে তেমতি
এ কাল-সমরে। বিধি প্রসারিছে বাহু
বিনাশিতে লঙ্কা মম, কহিনু তোমারে।”
নীরবিলা রক্ষোনাথ; শোকে অধোমুখে
বিধুমুখী চিত্রাঙ্গদা, গন্ধর্ব্বনন্দিনী,
কাঁদিলা,—বিহ্বলা, আহা, স্মরি পুত্ত্রবরে।
কহিতে লাগিলা পুনঃ দাশরথি অরি;—
“এ বিলাপ কভু, দেবি, সাজে কি তোমারে?
দেশবৈরী নাশি রণে পুত্ত্রবর তব
গেছে চলি স্বর্গপুরে; বীরমাতা তুমি;
বীরকর্ম্মে হতপুত্ত্র-হেতু কি উচিত
ক্রন্দন? এ বংশ মম উজ্জ্বল হে আজি
তব পুত্ত্রপরাক্রমে; তবে কেন তুমি
কাঁদ, ইন্দুনিভাননে, তিত অশ্রুনীরে?”
উত্তর করিলা তবে চারুনেত্রা দেবী
চিত্রাঙ্গদা;—“দেশবৈরী নাশে যে সমরে
শুভক্ষণে জন্ম তার; ব’লে মানি