পাতা:সবুজ পত্র (চতুর্থ বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

G6 R সবুজ পত্র আশ্বিন ও কাৰ্ত্তিক, ১৩২৪ যে ব্যাপারেই হউক আরামের অবস্থাটা যে বেশ সুখকর, এ সম্বন্ধে বড় দ্বিমত নাই । কিন্তু বিসম্বাদকে বর্জন করিয়া কেবল আরামে কাল কাটানো বুঝি প্রকৃতির অভিপ্ৰায় নয়। বিশ্বপ্রকৃতিরও নয় মানবপ্ৰকৃতিরও নয়। অন্ততঃ দুয়ের ভাগ্যে একটানা আরামের ভোগ বিধাতা যেন লিখেন নাই। তাই বিশ্বের মাঝে একটা না একটা সংঘর্ষ লাগিয়াই আছে, মানব-সমাজেও এই সংঘর্ষের কখন অনাটন হয় না। বিশ্বের তুলনায় মানব-সমাজ অবশ্যই অতি ক্ষুদ্র। এই সঙ্কীর্ণ গণ্ডীর মধ্যে অনেক সময়েই আমরা একটা আরামের আশা * করিতে পারি। কিন্তু তাহ বড় ঘটে না কেন ? এখানে হিসাবে যে একটু ভুল হইতেছে। বিশ্বের কাছে মানব-সমাজ নিশ্চয় খুবই ছোট সমুদ্রের কাছে জলবিন্দু, কিন্তু তাহা হইলে কি হয়, এ কথাটা যে শুধু বাহিরের আয়তনেই খাটে। মানবের যে বাহির ছাড়া একটা অন্তর-আয়তন আছে । বিশ্বের সেটা আছে কিনা জানি না, অন্ততঃ তাহার খোজ আমরা বড় পাই নাই। মানবের বাহিরের চেয়ে এই অন্তরের আয়তনটা এত বেশী যে আমরা তাহার মাপজোখ কোন দিন করিতে পারিব কিনা। সন্দেহ । আচার ও বিচারের সংঘর্ষটা মানবের এই অন্তর-রাজ্যের অন্তৰ্গত। তাই এই বিপুল মানসক্ষেত্রে ইহার বিরতির আশাটাও যেন সুদূরপরাহত । এখন দ্রষ্টব্য বিচার বলিয়া এই জিনিসটা দেখা দেয় কোথায় ? অবশ্যই এটা একটা দৈব বিড়ম্বন নয়। বিচার ও আচারের ভাঙ্গাগড়ায় দেবতারা কোন হাত লাগান না । আচার মানুষেই গড়ে, ভাঙ্গেও তাহ মানুষে। অনেক সময় পাঁচজনে পরামর্শ করিয়া গড়ে, আবার অনেক সময় একজনের মাথাতেই আসে, শেষে পাঁচজন