পাতা:সবুজ পত্র (চতুর্থ বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

o 어 to, os বসেচে। কিন্তু আমি যতটা দেখোঁচি, তাতে আমার মনে হয় য়ুরোপের সঙ্গে জাপানের একটা অন্তরতর জায়গায় অনৈক্য আছে। যে গুঢ় ভিত্তির উপরে যুরোপের মহত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত, সেটা আধ্যাত্মিক । সেটা কেবলমাত্ৰ কৰ্ম্মনৈপুণ্য নয়, সেটা তার নৈতিক আদর্শ। এইখানে জাপানের সঙ্গে যুরোপের মূলগত প্ৰভেদ । মনুষ্যত্বের যে-সাধনা অমৃত লোককে মানে, এবং সেই অভিমুখে চলতে থাকে, যে-সাধনা কেবলমাত্ৰ সামাজিক ব্যবস্থার অঙ্গ নয়, যে-সাধনা সাংসারিক প্ৰয়োজন বা স্বজাতিগত স্বার্থকেও অতিক্রম করে আপনার লক্ষ্য স্থাপন করেচে,-সেই সাধনার ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে য়ুরোপের মিল যত সহজ, জাপানের সঙ্গে তার মিল তত সহজ নয়। “ জাপানী সভ্যতার সৌধ এক-মহলা-সেই হচ্চে তার সমস্ত শক্তি এবং দক্ষতার নিকেতন । সেখানকার ভাণ্ডারে সব চেয়ে বড় জিনিস যা সঞ্চিত হয়, সে হচ্চে কৃতকৰ্ম্মত,-সেখানকার মন্দিরে সব চেয়ে বড় দেবতা স্বাদেশিক স্বার্থ। জাপান তাই সমস্ত য়ুরোপের মধ্যে সহজেই আধুনিক জৰ্ম্মণির শক্তি-উপাসক নবীন দার্শনিকদের কাছ থেকে মন্ত্র গ্ৰহণ করতে পেরেচো ; নীটুকের গ্রন্থ তাদের কাছে সব চেয়ে সমাদৃত। তাই আজ পৰ্যন্ত জাপান ভাল করে স্থির করতেই পারলে না-কোনো ধৰ্ম্মে তার প্রয়োজন আছে কিনা, এবং ধৰ্ম্মটা কি। কিছু দিন এমনও তার সঙ্কল্প ছিল যে, সে খৃষ্টানধৰ্ম্ম গ্ৰহণ করবে। তখন তার বিশ্বাস ছিল যে, য়ুরোপ যে-ধৰ্ম্মকে আশ্রয় করেচে, সেই ধৰ্ম্ম হয়ত তাকে শক্তি দিয়েচে-অতএব খৃষ্টানীকে কামানবন্দুকের সঙ্গে সঙ্গেই সংগ্ৰহ করা দরকার হবে। কিন্তু আধুনিক যুরোপে শক্তিউপাসনার সঙ্গে সঙ্গে কিছুকাল থেকে এই কথাটা ছড়িয়ে পড়েচে যে,