পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৩১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

No 9 সবুজ পত্র छ, ४७२७ তাহ’লে তুমি গান গাইতে এসো কেন ? আমরা শুনতে চাইআমাদের এই পাড়াপাড়শীদের কথা, তারা কি করে, তাদের স্ত্রীরাই বা কে কি করে। ওই যে রাস্তার ধারে মোটা বণিকটা বাস করে, শুনতে পাই ও বেজায় লোক ঠকায়। আরও কিছু দূরে একজন মস্ত মহাত্মা আছেন, গোপনে গোপনে তিনি অনেক কুকাণ্ড করেন। এই সব নিয়ে তুমি একটি গান রচনা করি, তবে তা বুঝি তুমি একটী কবি। কবি বললে, এত পঙ্কিলতার ভিতর থেকেও তোমার পঙ্কিলতার সাধ মিটালনা, গানেও তুমি তাই চাও । মহাপাত্র রেগে বল্লেন, বেয়াদব । ঠিক কোথাকার । তোমার কোকিল আর তোমার মাছরাঙ্গা, না তোমার মাথা ! বেরিয়ে যাও তুমি আমার বাড়ী থেকে ! কবি আবার রাস্তায় বেরল। ধীরে ধীরে গিয়ে পণ্ডিতের কুটীরের দাওয়ায় বসে, তার বীণাটিতে ঝঙ্কার দিতে লাগল। পণ্ডিত তখন চশমা চোখে দিয়ে পুথি লিখছিলেন, তিনি বিরক্ত হয়ে বললেন, বৎস! তুমি অন্যত্র যাও, আমি এখন ব্যস্ত আছি। কবি বললে, আপনাকে আমি গান শোনাতে এসেছি, আপনি একটী গান শুনুন-তারপর সেই গানটী গাইল । পণ্ডিত গান শুনে বিশেষ চিন্তান্বিত হ’লেন, তারপর বললেন, বৎস , একটু অপেক্ষা কর, আমি তোমার দ্রান্তি দেখিয়ে দিচ্ছি। --এই বলে তিনি তঁার এক জীৰ্ণ পুথি দেখিয়ে বললেন, দেখা বইয়েতেই লিখেছে যে, প্ৰকৃতির সম্বন্ধে গান যে যুগে লেখা উচিত ছিল, সে হচ্ছে মধ্যযুগ। আজকাল বাস্তবের যুগ চলছে। অবশ্য তোমার কবিতাতে যে প্ৰশংসনীয় কিছু নেই, আমি তা বলছিনে। তোমার কবিতার সঙ্গে প্ৰকৃতির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। কিন্তু সাহিত্যের ইতিহাস না জানাতে, তুমি ভুল বিষয় নির্বাচন করেছ। আজ আমি বিশেষ কাজে ব্যস্ত