পাতা:সবুজ পত্র (তৃতীয় বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৫৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

809 y সবুজ পত্ৰ बांघ, s७२७ ন-ঘাড় নাড়ছে। মাথা এদিক ওদিক করছে। তাই কি আর নিস্কৃতি আছে। চাষী এমনি ঠেঙ্গাচ্ছে যে পিঠে লম্বা লম্বা লাল দাগ পড়ে যাচ্ছে। প্ৰমাণ পেলুম মানুষের মত গরুর শরীর ও রক্ত মাংসের। পাশে জমির একটি আলোর উপর একটি ছোকরা বসে আছে। বয়সে বালক হলেও, জরা সুড়ঙ্গ কেটে তার ভিতরে ঢুকেছে। মুখে তার মৃত্যুর ছায়া পড়েছে। থাকবার মধ্যে ছিল হাড় ক খানি। আর “টিপ” মাছের মত তার পেটটি। মাথার চুল এত বিরল যে দু'একটি করে গোণা যেতে পারে। অত যে গা-পোড়ানো রোদ, তবুও শীতে কঁাপিছে। পাড়াগায়ের স্বাস্থ্যের লক্ষণ । তারপর,-সেও দেখবার মত একটা জিনিস। কোমরে কাপড় জড়িয়ে, মা বসুন্ধরার বুকে লাথি মেরে, পবন দেবের সঙ্গে কি লড়াই লড়ছে। লড়াইটে হচ্ছে কথার, আর সে কথা কি কটু কি তীব্ৰ আৱ তার কি জোর কি তোড় । বীরত্ব বটে ! মেয়েমানুষ যে শক্তিস্বরূপিনী, এতদিন আমি মানতুম না। আজ তার চাক্ষুশ প্রমাণ পেলুম। আর একটি ঘটনা-উল্লেখ করবার মত। সারাবাড়ি নিয়ে একখানি ঘর, বেড়া ভেঙ্গে পড়ছে, চালের খড় খসে পড়ছে ; সেই ঘর থেকে আবার বেরিয়ে এলেন, না-চাষ না-বাবু এক অদ্ভুত ধরণের জীব। পায়ে জুতো, পরনে ময়লা ঘুটুঘুটে কাপড়, গায়ে ধপধাপে জামা, গলায় গরদের চাদর। মুখে আবার “red lamp” সিগারেট । জীবটিতু বেরিয়ে পড়লেন। বুড়ি মা চেচিয়েই অস্থির। “আধ পয়সা রোজগার নেই, বাবুগিরি করে বেড়াবি, ঘরে একমুঠো চাল নেই। পিণ্ডের জোগাড়’ কোখোঁকে হবে ?