পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবুজ পত্র জ্যৈষ্ঠ, ১৩২৫ অতএব ওশব্দটি প্রবন্ধে না চল্লেও, পত্রে চলে। অন্তত এ কথা অস্বীকার করবার জো নেই যে, জ্যামিতিক শব্দ বাংলাভাষায় না থাকলেও জ্যামিতিক লোেক বাংলাদেশে ঢের আছে, এমন কি শিশুদের মধ্যেও ওদলের অভাব নেই। ত্রিশমাস বয়েসের আমার একটি ভ্রাতুস্পুত্র, এই মিনিট খানেক আগে, আমার সােণার ঘড়িটি নিয়ে মেজের উপরে ঘড়ি পেতে, বৃত্তকে চতুষ্কোন করবার চেষ্টা করছিল। আমি বাধা না দিলে, সে সমস্যার সে যে অতি সহজেই সমাধান কর্ত সে বিষয়ে আর সন্দেহ নেই। এই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া থেকে তাকে নিরস্ত করায় সে যে কেঁদে পাড়া মাথায় করছে তাতেও তার দোষ দেওয়া যায় না। ছােট ছেলেদের স্বভাবই এই যে তাদের কোনও স্বভাব নেই। তারা বড়দের যা করতে দেখে তাই করূতে শেখে। আমরা যখন ভারতবর্ষের যেখানে যা কিছু গােল আছে তাকে চৌকোষ করতে উদ্যত হই, আর আমাদের গুরুজনেরা সে কাৰ্যে বাধা দেন, তখন আমরা কান্না ছাড়া আর কি করি। আমার জ্যামিতিক বন্ধুকে আমি এই কারণে মান্য করি যে তিনি, কোন কিছুরই আকার বদলাতে চান না। আকারের উপরে তাঁর ভক্তি এত নৈসর্গিক যে তিনি মনে করেন যে, দ্রব্যের গুণ তার আকারের উপরেই নির্ভর করে। রসগােল্লার সঙ্গে জিবে-গজার স্বাদের পার্থক্যের একমাত্র কারণ যে, প্রথমটির আকার জ্যামিতির এবং দ্বিতীয়টির Conic-section-এর অন্তর্ভূত, তার একথা অবশ্য আমি মানিনে। কিন্তু একথা আমি স্বীকার করতে বাধ্য যে তিনি এক বিষয়ে আমার চোখ ফুটিয়ে দিয়েছেন। ইউক্লিডের জ্যামিতি যে বিজ্ঞান নয়,-আট, এ জ্ঞান আমি তার প্রসাদে লাভ করেছি। এ