পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১১৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৩২৫ বাঘ বৰাহ প্রভৃতি হিংস্র জন্তুগুলো মারা পড়ছে। আমি এখানে আমার সামনের এই সবকটা জালা খুলে দিয়ে, এখানকার দুপুরের রৌদ্রে বড় বড় গাছওয়ালা কাঁচা রাস্তার উপর দিয়ে পাড়াগাঁয়ের অনতিব্যস্ত লােক চলাচলের প্রতি, অনিমেষ নেত্র নিহিত রেখে এমনি অন্যমনস্ক উড়াে উড়াে ভাবে থাকি যে, একটু মনঃসংযােগ করে একটা ভদ্ররকম প্রমাণসই চিঠি যে লিখব তার সামর্থ্য নেই। এই ক্ষুদ্রায়তন কাগজে দুটো চারটে অসংলগ্ন কথা লিখে কোনমতে সাঙ্গ করে দিতে হয়। এখানকার বাতাসে এবং বাহদৃশ্যে এমন একটা আলস্য, ঔদাস্য, বৈরাগ্য অথচ এমন একটা মাধুৰ্য আছে যে আমার মন, কিছুতে নিবিষ্ট হয়ে আছে কি বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে কিছু বুঝতে পারচি নে। মানসী সম্বন্ধে যে লিখেছ, যে তার মধ্যে একটা Despair এবং Resigna- tion-এর ভাব প্রবল, সেই কথাটা আমি ভাবছিলুম। প্রতিদিনই আমি দেখতে পাচ্ছি নিজের রচনা এবং নিজের মনসম্বন্ধে সমালােচনা করা ভারি কঠিন। আমি বের করতে চেষ্টা করছিলুম এই Despair এবং Resignation-এর মূলটা কোনখানে। আমার চরিত্রের কোনখানে সেই কেন্দ্রস্থল আছে যেখানে গিয়ে আমার সমস্তটার একটা পরিক্ষার মানে পাওয়া যায়। কড়ি ও কোমলের সমালােচনায় আশু যখন বলেছিলেন, জীবনের প্রতি দৃঢ় আসক্তিই আমার কবিত্বের মূলমন্ত্র, তখন হঠাৎ একবার মনে হয়েছিল হতেও পারে। আমার অনেকগুলাে লেখা তাতে করে পরিস্ফুট হয় বটে। কিন্তু এখন আর তা মনে হয় না। এখন এক একবার মনে হয় আমার মধ্যে দুটো বিপরীত শক্তির দ্বন্দ্ব চলছে। একটা আমাকে সর্বদা বিশ্রাম এবং পরিসমাপ্তির দিকে আহ্বান করছে, আর একটা আমাকে কিছুতে