পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সবুজ পত্র বৈশাখ, ১৩২৫ হিন্দুর গৌরবের দিন গত হয় নি। তারি একদিন-আজ মনে পড়ে আসমুদ্র হিমাচল ভারতের নরনারী একপ্রাণে অশােকের ছত্ৰ-পতাকা- তলে সমবেত হয়েছিল। সে দিন দিকে দিকে ভারতের বাণী বহন করে লােক ছুটুল। উত্তুঙ্গ ভুধর তাদের গতি রোধ করতে পারুল । অকূল পরাবারের উত্তাল তরঙ্গ-মালা তাদের পথ করে দিলে। অমৃতের সন্ধান পেয়ে সে দিনের হিন্দুরা সে-অমৃত নিয়ে বিশ্ববাসীর দ্বারে দ্বারে ফিরুল।

তারপর তেমনি আর একদিন উজ্জয়িনীর কনকপুরীতে জগন্মাতা হিন্দুর সভ্যতার যে এক অভ্রভেদী মন্দির গড়ে তুলেছিলেন—ঐশ্বৰ্য্য গৌরব, জ্ঞান, শক্তি দিয়ে ভরে তুলেছিলেন—সে কাহিনী আজও হিন্দুর মনে সহস্র নৈরাশ্যের অন্ধকারের মাঝে স্বর্ণরেখার মতো উজ্জ্বল হয়ে আছে। আজ আমি মানস-নয়নে দেখতে পাই—সেই সুবর্ণপুরী উজ্জ্বয়িনী-সেই উজ্জয়িনীর পথে পথে নরনারী কলহাস্যে গতিলাস্যে নির্ভীক উন্নতশিরে বিচরণ করছে-পথ-পাশে পাশে সহস্র বিপণিতে পণ্যরাজির আর অন্ত নেই—সেদিন বাতাসে বাতাসে ক্ষুব্ধ হাহাকারের পরিবর্তে আনন্দোচ্ছসিত কলহাস্য—আকাশে আকাশে ভিন্ন দীর্ঘশ্বাসের পরিবর্তে তৃপ্তির সুখান্বিত হিল্লোল—মানুষের অন্তরে অন্তরে মৃত্যুর পরিবর্তে, অনন্ত দুরাশা, দুর্দমনীয় আকাঙ্ক্ষা পোষণ করবার শক্তি। মানস-নয়নে আমি দেখতে পাই—সে দিন উজ্জয়িনীর অসংখ্য চতুষ্পঠীতে কত কত দিক দেশ হ'তে কত নরনারী এসে জগন্মাতা