পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২ আষাঢ়, ১৩৫ এই মনে করে দক্ষিণা দ্রুতপদে গৃহে প্রত্যাবর্তন করল। না,-কুরের দ্বার তেমনি রুদ্ধ। কেউ কোথাও নেই। আশে পাশে কোন খানে প্রসাদ থাকতে পারে মনে করে দক্ষিণা উচ্চৈঃস্বরে ডাকল “প্রসাদ প্রসাদ”, কোন উত্তর নেই। প্রসাদ ফেরে নি। প্রস্তপদে দক্ষিণ আবার বাটী থেকে বহির্গত হ’ল। আবার পাড়া প্রতিবেশীদের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে জিজ্ঞেস করূতে লাগল। কোথাও প্রসাদ নেই। এমনি করে যখন দক্ষিণা চতুর্থবার গৃহ থেকে গৃহান্তরে কেঁদে কেঁদে প্রসাদের খোঁজ করে বেড়াচ্ছিল তখন একটি ছােটছেলে দক্ষিণাকে বল যে, প্রসাদ খেলার মাঝখানে ছাতিমতলা থেকে চলে গিয়েছিল—আর তার যদূর মনে পড়ে তাতে সে প্রসাদকে ছাতিমতলা থেকে যে পথটী সমুদ্রের দিকে গিয়েছে সেই পথ ধরে তাকে যেতে দেখেছে। দক্ষিণা মুহূৰ্ত্ত মাত্র অপেক্ষা না করে দেবতার কাছে নানা মানত করূতে করতে চলল। ছাতিমতলায় এসে দেখল সে স্থান জনশূন্য। দক্ষিণা সেখান থেকে যে-পথ সমুদ্রের দিকে গিয়েছে সেই পথ ধরে চলল। কিছুকালের মধ্যে দক্ষিণা সমুদ্রের ধারে এসে উপস্থিত হ’ল। সেখানে এসে সে ইতস্তত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে যা দেখল তাতে তার চক্ষুস্থির হয়ে গেল। দক্ষিণা দেল সমুদ্রের ধারে একখানে বঝাউ আর নারিকেল গাছে একটা কুঞ্জের মত সৃষ্ট হয়েছে—আর সেখানে প্রসাদ একটি ঝাউয়ের গায়ে হেলান দিয়ে বসে একদৃষ্টে সমুদ্রের দিকে চেয়ে আছে। মধ্যাহ্ন-সূৰ্য-উদ্দীপ্ত-আকাশ সমুদ্রকে একটা অতি মনােরম চোখজুড়ান নীল রঙে রাঙিয়ে দিয়েছে। গত রাত্রির ঝা-তাড়িত উর্মিমালা এখনও যেন তাদের তাল সামলিয়ে উঠতে পারে নিতাই