পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২২০ বু ৰ শ্রাবণ, ১৩২৫ পারলেম না! রা সম্পদ দিয়ে গেলেন পরকে, আর শ্রদ্ধা নিয়ে গেলেন আমাদের। যাহােক, এতদিনে সৎ-সমালােচকের দৃষ্টির গুণে তাদের এ প্রবঞ্চনাটা আজ ধরা পড়ে গেল-মন্দের ভাল । তাই আমরা আজ আমাদের সাহিত্যের জাতরক্ষার্থে বদ্ধপরিকর হয়েছি ভারতবর্ষের সনাতন মাটির এমনি গুণ! এখানে কিছুই নতুন হবার জোটি নেই! কিন্তু মুস্কিলের কথা এই যে, ভারতবর্ষের মাটী যতটা স্থিতিশীল, ভারতবাসীর মনটা ততটা নয়। আর যে জিনিসটা সাহিত্যিক গড়ে তােলে, সেটা দেশের মাটি নয়–দশের মন। আর এই মন জিনিসটা গতিশীল। কিন্তু সে গতি নিরেট পাকা সড়কের মতাে নয়—সেটা হচ্ছে তরল উজ্জ্বল স্রোতস্বিনীর মতে—কাজেই এ গতিতে ভাঙাগড়া আছে—আর যেখানে ভাঙাগড়া আছে সেখানেই পরিবর্তন আছে—এক রূপ থেকে আর এক রূপে, এক ভাব থেকে আর এক ভাবে, এক সুর থেকে আর এক সুরে। আর যেহেতু সাহিত্য জিনিসটা জাতীয় মনের দর্পণস্বরূপ, সেজন্যে সেখানে যে যুগে যুগে জাতীয় মনের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবিম্ব পড়বে, সেটা লজিকের পাতা না উলটিয়েও বলা যায়। কেননা মনকে ফাকি দিয়ে আর যাই করা যাক-কাব্যও লেখা যায় না, সাহিত্যও গড়া যায় না। সুতরাং দাঁড়াল এই যে, আমাদের সাহিত্যকে যদি একটা বিশিষ্ট ভাব বিশিষ্ট রূপ বিশিষ্ট সুরের মাঝে আবদ্ধ রাখতে চাই, তবে আমা- দের জাতীয় মনটাকে আবদ্ধ করে রাখতে হবে। সে মনে যেন নব নব ভাব, নব নব সুর, নব নব চিন্তা না লাগে; নবীন প্রাণের নব অনুরাগকে আমাদের অবজ্ঞার ও অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে দেখতে শিখতে