পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম বর্ষ, চতুর্থ সংখ্যা সাহিত্যের জাতরক্ষা এ পর্যন্ত এরা বাংলিয়ে দেন নি। আর রাধাকৃষ্ণ চিরটা কাল যে কেন নায়কনায়িকার স্থান মৌরসি পাট্টা করে বসে থাকবেন, তাও বােঝা যায় না—অবশ্য একটা কারণ ছাড়া। সেটা হচ্ছে এই যে, এঁরা দুজনেই পুরাতন। আর পুরাতনের প্রতি সনাতন মনের টান চিরকালই দেখা যায়। কিন্তু মানুষ নিজে একদিন যা’ তৈরি করেছে, তা’ দিয়ে আর একদিন তাকেই আবদ্ধ করতে চাওয়ার মতাে মুখত মানুষের জীবনে আর কিছু নেই। যাহােক, এদের এই মতের বিরুদ্ধে আমাদের কথা বলতেই হবে, নইলে আমরাও হব সেই চীনেম্যানের সামিল—যে বলেছিল যে তার মাথাটা আর চীনে-মাথা নেই, সেটা হয়ে গেছে বিদেশী মাথা—কেননা সেমাথা থেকে টিকি কেটে ফেলা হয়েছে। চীনেম্যানের বুদ্ধি তাকে বােঝবার অবসর দেয় নি যে, তার মাথার ওপরেই চীনে-টিকি গজিয়ে- ছিল তার টিকির আগায় চীনে-মাথা গজায় নি। (0) কোন মানুষ দুইমুহূর্ত এক লােক নয়। দু’মুহূৰ্ত্ত এক হলেও দু' দিন এক নয়—দু’ দিন এক হলেও দু' বছর এক নয়। তার দেহের ত কথাই নেই—সেটা আমাদের চর্মচক্ষেই ধরা পড়ে—কিন্তু তার স্তরও পলে পলে তিলে তিলে নূতন হয়ে উঠছে-নৰ নব কল্পনা নব নব আশা আকাথা দিয়ে—নব নব বেদনার মধ্যে দিয়ে। কেনন মানুষের জীবনের রাগ এক নয়-সহস্র। মানুষের অন্তর-দেবতার জীবন-পথে অভিমান হয় সহজ রাগিণীতে বাঁশী বাজিয়ে-গহন্দ্র