পাতা:সবুজ পত্র (পঞ্চম বর্ষ) - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সৰু পত্র বৈশাখ, ১৩২৫ এ বাহুল্য যে, ছােট ছেলেও মানুষ,-কেননা বৃদ্ধত্ব ও মনুষ্যত্ব এক বস্তু নয়। স্বচ্ছন্দে চলবার ফেরবার দৌডুবার লাফাবার জন্য ছেলেদের পক্ষে যে মাঠ চাই, এ কথা যে আজকাল অনেকেই মানে তার প্রমাণ, সহুরে স্কুলও খেলার মাঠের জন্য লালায়িত। ছেলেরা কিন্তু শুধু জমির উপর ছুটোছুটি করেই সন্তুষ্ট থাকে না, তারা গাছে চড়তে চায়, এলে নামতে চায়। একমাত্র স্থলচর হয়ে তাদের সুখ নেই, মাঝে মাঝে খেচর ও জলচর হতে পারলেই তারা আনন্দে থাকে। স্বাধীনতা তাদের দেওয়া একান্ত আবশ্যক। কিন্তু সহরের খেলার মাঠে তারা সাতার কাটতে পারে না, ডালেও চড়তে পারে না। সুতরাং স্কুল সেই জায়গাতেই হওয়া উচিত যেখানে মাঠ আছে, গাছ আছে, জল আছে। আমরা সকলেই জানি যে, মানবজাতি তার শৈশবে প্রকৃতির কোলেই লালিতপালিত হয়েছে ; সুতরাং মানবশিশুর পক্ষে প্রকৃতির কোলেই মানুষ হওয়া স্বাভাবিক ;-কেননা যারা ছােট ছেলের মনের খবর রাখেন তারাই জানেন যে, আদিম মানবের সঙ্গে তাদের প্রকৃতির একটা মজ্জাগত মিল আছে। মানবজাতি যেমন প্রকৃতির সঙ্গে কারবার করে, যুগের পর যুগ ধরে, দেখে এবং ঠেকে শিখে সভ্য হয়েছে; শিশুকেও সেই পদ্ধতি অনুসরণ করে মানুষ হতে হবে; এই হচ্ছে নব-বিদ্যালয়ের স্রষ্টাদের মত। প্রকৃতির হাত ধরে এবং প্রকৃতিকে হাতে ধরেই মানুষের মন যে সজ্ঞান এবং সক্রিয় হয়ে ওঠে, এই বিশ্বাসের বলেই নব-বিদ্যালয়ের নব-শিক্ষাপদ্ধতি রচিত হয়েছে। যখন মানসিক শিক্ষার অধ্যায়ে এসে পড়ব, তখন সে পদ্ধতির নূতনত্ব ও সার্থকতার পরিচয় দেব। এস্থলে এইটুকু বললেই যথেষ্ট